অস্ট্রেলিয়ায় তৈরি করোনাভাইরাসের একটি টিকার ‘ট্রায়ালে’ অংশগ্রহণকারীদের কয়েকজনের এইচআইভি পরীক্ষার ফলাফল ‘পজিটিভ’ আসায় ওই টিকার ট্রায়াল পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
Published : 11 Dec 2020, 12:17 PM
অস্ট্রেলিয়ার ফার্ম সিএসএল এবং ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ড (ইউকিউ) যৌথভাবে ওই টিকা তৈরি করছিল।
তারা বলছে, টিকার ‘ট্রায়ালে’ অংশগ্রহণকারীদের কয়েকজনের এইচআইভি পরীক্ষার ফলাফল ‘পজিটিভ’ এলেও সেটা আসলে সঠিক না। পরীক্ষায় ‘ভুল’ ফলাফল দেখাচ্ছে। টিকার ‘ট্রায়ালে’ অংশগ্রহণকারীদের স্বাস্থ্যের কোনো ঝুঁকি নেই।
কিন্তু তারা যাই দাবি করুক, অস্ট্রেলিয়া সরকার জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো ঝুঁকির নিতে চায়নি। ফলে ইউকিউ/সিএসএল এর পাঁচ কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা কেনার যে চুক্তি অস্ট্রেলিয়া সরকার করেছিল, তা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ইউকিউ/সিএসএল এর টিকার চুক্তি বাতিল হয়ে যাওয়ায় যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, অন্যান্যদের কাছ থেকে বেশি টিকা কিনে তা পূরণ করা হবে।
তারা এরইমধ্যে আমেরিকান কোম্পনি ‘নোভাভ্যাক্স’ এর টিকা কিনতে একটি চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এছাড়া অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার যে চুক্তি হয়েছে সেখানেও ডোজের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
ইউকিউ/সিএসএল এর টিকায় কী হচ্ছে?
ইউকিউ/সিএসএল এর টিকার প্রথম পর্যায়ের ‘ট্রায়ালে’ এটি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে মানবদেহে সফলভাবে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পেরেছে। কিন্তু সমস্যা হলো, ‘ট্রায়ালে’ অংশগ্রহণকারী কারো কারো ক্ষেত্রে এটি এইচআইভি-র অ্যান্টিবডিও তৈরি করেছে। যার ফলে এইচআইভি পরীক্ষায় তাদের ফলাফল ‘পজিটিভ’ আসছে। কিন্তু পরে আরো বিস্তারিত পরীক্ষায় তাদের শরীরে এইচআইভি পাওয়া যায়নি।
ইউকিউ/সিএসএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাদের তৈরি করা টিকায় এই ত্রুটি ঠিক করতে প্রায় এক বছর লেগে যাবে। যে কারণে ট্রায়াল পরিত্যক্ত ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সচিব ব্রেন্ডান মারফি বলেন, “এ টিকার কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু আমরা জানি, আস্থার প্রশ্নে আমরা কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে পারি না। আর পরীক্ষায় এই ভুয়া পজিটিভ হওয়াতে হয়তো কিছু ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হবে এবং আস্থার অভাব দেখা দেবে।”
অস্ট্রেলিয়ায় এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে জানিয়ে অধ্যাপক মারফি বলেন, “আমাদের জরুরি অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। আমরা এখন ভালো অবস্থানে আছি। কারণ আমাদের দেশে ভাইরাস এখন বেশ নিয়ন্ত্রণে আছে।
“এবং আমার বিশ্বাস, আগামী বছর আমরা একটি সফল টিকা কার্যক্রম চালাতে পারব।”
আড়াই কোটি মানুষের দেশ অস্ট্রেলিয়ায় গত সপ্তাহে স্থানীয়ভাবে মাত্র একজনের কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে ২৮ হাজার রোগী, মারা গেছেন ৯০৮ জন।