ইন্দোনেশিয়ার একজন কট্টরপন্থি ইমামের সন্দেহভাজন ছয় সমর্থক পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন।
Published : 07 Dec 2020, 04:15 PM
স্থানীয় সময় সোমবার প্রথম প্রহরে একটি মহাসড়কে ঘটনাটি ঘটেছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন জাকার্তার পুলিশ প্রধান ফাদিল ইমরান।
ফাদিল জানান, কট্টরপন্থি ইমাম ও ইসলামিক ডিফেন্ডার ফ্রন্টের (এফপিআই) প্রধান রিজিক শিহাবের সমর্থকদের বহন করছে এমন ধারণা থেকে ওই মহাসড়কে একটি গাড়িকে অনুসরণ করার এক পর্যায়ে পুলিশের একটি গাড়ির ওপর হামলা চালানো হয়, এতে দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে ওই ছয় জন নিহত হন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়ায় রক্ষণশীল ইসলামি দল এফপিআই সম্প্রতি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্রীয় আদর্শের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন ও পর্নোগ্রাফির অভিযোগ আনার পর দলটির ৫৫ বছর বয়সী প্রধান রিজিক ২০১৭ সালে দেশ ছেড়ে স্বেচ্ছা নির্বাসনে সৌদি আরব চলে গিয়েছিলেন।
তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তার সমর্থকরা। তার সুনাম নষ্ট করার জন্যই এসব করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। কয়েক বছর বিদেশে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকলেও রিজিকের জনপ্রিয়তা কমেনি বলে ধারণা পর্যবেক্ষক মহলের।
গত মাসে নির্বাসন ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি। যখন রাজধানী জাকার্তায় এসে নামেন তখন সাদা ইসলামি জোব্বা পরা তার হাজার হাজার সমর্থক বিমানবন্দরের সামনের রাস্তায় ভিড় করেন। করোনাভাইরাসজনিত বিধিনিষেধ অগ্রাহ্য করে তারা ইমামের হাতে চুমু খাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করেন।
১৯৯৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার সাবেক স্বৈরাচারী শাসক সুহার্তোর পর পতন হওয়ার পর থেকে এটিই ছিল জাকার্তায় সবচেয়ে বড় সমাবেশ।
দেশে ফিরে আসার পর রিজিক তার পরিকল্পনা তুলে ধরে ‘নৈতিক ধর্মযুদ্ধ’ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কিছু রাজনীতিক ও বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্য প্রটোকল না মানায় রিজিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এই তদন্তের সূত্র ধরেই তার সন্দেহভাজন ওই সমর্থকদের অনুসরণ করছিল তারা।
সোমবারের ওই প্রাণঘাতী সংঘর্ষের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে এফপিআইয়ের কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ইন্দোনেশিয়া ছাড়ার আগে রিজিক কট্টরপন্থি ‘২১২’ আন্দোলনের প্রধান ছিলেন। এই আন্দোলন জাকার্তার সাবেক খ্রিস্টান গভর্নর বাসুকি তাহাজা পুরনামার বিরোধিতায় আন্দোলনে নেমেছিল। পুরনামা, যিনি ‘আহোক’ নামেই বেশি পরিচিত, ইসলাম অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হয়ে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।