নিস শহরের গির্জায় হামলা চালিয়ে ৩ জনকে মেরে ফেলা তিউনিসিয়ার নাগরিক গত মাসেই ইউরোপে নামেন বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের কর্মকর্তা।
Published : 30 Oct 2020, 01:51 PM
২১ বছর বয়সী সন্দেহভাজন হামলাকারী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকায় চেপে গত মাসে ইতালির ল্যাম্পেদুসা দ্বীপে নেমেছিলেন। সেখানে তাকে করোনাভাইরাস মোকাবেলার বিধি অনুযায়ী কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। তারপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং ইতালি থেকে চলে যেতে বলা হলে চলতি মাসেই তিনি ফ্রান্সে পৌঁছান।
তার কাছে ইতালির রেড ক্রসের দেওয়া কাগজপত্র ছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গির্জায় হামলার ঘটনাকে ‘ইসলামী সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।
ইউরোপের এ দেশটিতে এক মাসে দুটি হামলার পর বিভিন্ন গির্জা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগমস্থলগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনা সদস্যের সংখ্যা ৩ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭ হাজার করা হয়েছে।
সন্ত্রাসবিরোধী কৌঁসুলিরা বৃহস্পতিবারের হামলার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। ফ্রান্স তাদের নিরাপত্তা সতর্কতাও সর্বোচ্চ মাত্রায় উন্নীত করেছে।
হামলার পর পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার আগ পর্যন্ত সন্দেহভাজন হামলাকারী চিৎকার করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
তার কাছে একটি কোরান, দুটি টেলিফোন ও ১২ ইঞ্চির একটি ছুরি ছিল বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধান সন্ত্রাসবিরোধী কৌঁসুলি।
“হামলাকারীর একটি ব্যাগও পেয়েছি আমরা। তার পাশে আরও দুটি ছুরি ছিল, যদিও হামলায় সেগুলো ব্যবহৃত হয়নি,” বলেছেন তিনি।
সন্দেহভাজন হামলাকারীর নাম ব্রাহিম আইউসাওয়ি বলে জানিয়েছে পুলিশের বেশ কয়েকটি সূত্র। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিসের নতর দাম বাসিলিকা গির্জায় তার হামলায় নিহতদের মধ্যে দুইজনই নারী। এর মধ্যে ৬০ বছর বয়সী এক নারীর মাথা শরীর থেকে কার্যত আলাদা হয়ে পড়েছিল বলে জানিয়েছেন ফরাসী কর্মকর্তারা।
নিহত ৫৫ বছর বয়সী অপর ব্যক্তিরও গলা কাটা ছিল। হামলাকারীর কয়েকদফা ছুরিকাঘাতে আহত ৪৪ বছর বয়সী আরেক নারী পালিয়ে কাছের একটি ক্যাফেতে আশ্রয় নিয়েছিলেন; পরে তারও মৃত্যু হয়।
পুলিশ পরে ঘটনাস্থলে এসে সন্দেহভাজন হামলাকারীকে গুলি করে ও পরে আটক করে।
ব্রাহিমিকে নিয়ে তিউনিসিয়াতেও তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্র পরিচালিত গণমাধ্যম।
চার বছর আগে নিসেতে বাস্তিল দিবস উদযাপনের সময় তিউনিসিয়ারই এক নাগরিক একটি ট্রাক ভিড়ের ওপর তুলে দিলে ৮৬ জনের মৃত্যু হয়। ওই হামলাকে ফ্রান্সে হওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলাগুলোর অন্যতম বলে ধরা হয়।
বৃহস্পতিবারের হামলার ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার নিন্দা জানিয়েছে। এসব দেশগুলোর ফ্রান্সের প্রতিবেশীরা ছাড়াও আছে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, মিশর, কাতার ও লেবানন।