যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এবার মঙ্গল গ্রহ অভিযানে মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করেছে চীন।
Published : 23 Jul 2020, 06:27 PM
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৪১ মিনিটে হাইনান দ্বীপের ওয়েনচাঙ মহাকাশ কেন্দ্র থেকে একটি অর্বিটার, ল্যান্ডার ও রোভারকে নিয়ে মঙ্গলের পথে পাড়ি দিয়েছে চীনের বৃহত্তম মহাকাশ রকেট 'লং মার্চ ৫'।
মহাকাশে বিশ্ব নেতৃত্ব দেওয়া এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা জাহিরের চেষ্টায় চীন যুক্তরাষ্ট্রের মঙ্গল অভিযানের মতোই তাদের প্রথম এই স্বাধীন ‘তিয়ানওয়েন-১’ (কোয়েশ্চেনস টু হেভেন) মিশন শুরু করল।
বিবিসি জানায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলের কক্ষপথে পোঁছানোর কথা রয়েছে চীনা মহাকাশযানটির।
মঙ্গলগ্রহে ১১ দিনের ব্যবধানে চীনের ‘তিয়ানওয়েন-১’ নিয়ে মোট তিনটি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
গত সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রথম মঙ্গল মিশনের সফল উৎক্ষেপণ করেছে জাপানের মহাকাশ কেন্দ্র থেকে। যুক্তরাষ্ট্র এর আগেই এ ধরনের মিশনের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নভোযান উৎক্ষেপণের কথা রয়েছে ৩০ জুলাইয়ে।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এই ‘পারসিভারেন্স’ মিশনের আগেই চীন মঙ্গলে তাদের নভোযান পাঠাল। চীনের ‘তিয়ানওয়েন-১’ দেখতেও অনেকটাই নাসার রোভার ‘স্পিরিট’ এবং ‘অপরচুনিটি’র মতো। এর ওজন ২৪০ কেজি।
রকেটটি যাতে মঙ্গলের মাটিতে নিরাপদে অবতরণ করতে পারে সেজন্য চীন সব ব্যবস্থাই রেখেছে। প্যারাশুট, এয়ারব্যাগ রয়েছে ল্যান্ডারে। রোভারের সোলার প্যানেল কাজ করবে সৌরশক্তিতে।
মঙ্গলে অবতরণের পর ৯০ দিনে সেখানকার পাথর ও মাটি পরীক্ষা করে পৃথিবীতে সমস্ত তথ্য রেডিও সিগন্যালের মাধ্যমে পাঠানোর কথা রয়েছে রোভারের। রাডার, ম্যাগনেটোমিটাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি থাকায় রোভারটি মঙ্গলের মাটির ১০ মিটার গভীরের খনিজ পদার্থ পরীক্ষা এবং মাটির ১০০ মিটার গভীরে বরফের সন্ধান করতেও সক্ষম।
মঙ্গলে পাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতি ২০১১ সাল থেকেই শুরু করেছিল চীন। প্রথম মিশনের তোড়জোড় তারা চালিয়েছিল রাশিয়ার সঙ্গে। কিন্তু সে মিশন ব্যর্থ হয়। এরপর চীন নিজেই মহাকাশযান তৈরি শুরু করে। এবার নিজস্বভাবে তিয়ানওয়েন-১ মিশনে প্রথম মঙ্গলে পাড়ির চেষ্টা নিল চীন।
মঙ্গল অভিযানের এই দৌড়ে চীনের সামিল হওয়ার মধ্য দিয়ে অর্ধ শতাব্দী ধরে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের যে পরিস্থিতি তা বদলে যাবে বলে মনে করেন চীনা মহাকাশ কর্মসূচি বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের বিশ্লেষক চেন ল্যান।
তিনি বলেন, “মঙ্গলপৃষ্ঠে (তিয়ানওয়েন) নিরাপদে অবতরণ করে প্রথম ছবি পাঠাতে পারলে… এ অভিযান বড় ধরনের সফলতা অর্জন করবে।”