যুক্তরাজ্যে সপ্তদশ শতকের একজন দাস ব্যবসায়ীর মূর্তি ভেঙে সাগরে ফেলে দিয়েছেন বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনকারীরা।
Published : 08 Jun 2020, 06:21 PM
রোববার দক্ষিণপশ্চিম ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরে স্থানীয় বণিক এডওয়ার্ড কলস্টোনের স্মৃতিস্তম্ভটি দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনে নামায় আন্দোলনকারীরা, তারপর রাস্তা দিয়ে গড়িয়ে নিয়ে সাগরে ফেলে দেয়; জানিয়েছে সিএনএন।
কলস্টোন ষোড়শ শতকের শেষ দিকে দাস ব্যবসার মাধ্যমে তার সম্পদের বেশিরভাগ অংশ গড়ে তুলেছিলেন। তার মূর্তি ১৮৯৫ সাল থেকে শহরটিতে দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু বর্তমানে বহুসংস্কৃতির শহরটিতে তার মূর্তির উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক বাড়ছিল।
স্তম্ভের ওপর থেকে মূর্তিটি নিচে পরার পর জনতা উল্লাস প্রকাশ করে এবং যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ হেফাজতে নিহত ফ্লয়েডের স্মরণে এর ওপর হাঁটু তুলে দিয়ে রাস্তায় সঙ্গে চেপে ধরে রাখে, তারপর ঠেলে, গড়িয়ে ব্রিস্টল বন্দরে নিয়ে সাগরে ফেলে দেয়।
ব্রিটেনের সাম্রাজ্যবাদী অতীতের বিভিন্ন ব্যক্তিত্বের মূর্তি নিয়ে দেশটিতে কয়েক বছর ধরে বিতর্ক চলছে। একদল বলছে এসব স্মৃতিস্তম্ভ শুধু ইতিহাসের প্রতিফলন কিন্তু অপরদলের দাবি, এগুলো বর্ণবাদকে মহামান্বিত করছে।
রয়টার্স বলছে, যে বিতর্ক শুধু মিছিল, পিটিশন ও সংবাদপত্রের কলামে সীমাবদ্ধ ছিল আন্দোলনকারীরা সেই বিষয়টিকে নিজেদের হাতে নিয়ে বিতর্ককে তীব্র করে তুলেছে।
ঘটনাটি অনেকেই উদযাপন করেছেন এবং মূর্তি ফেলার ভিডিও যুক্তরাজ্যে ভাইরালও হয়েছে। কিন্তু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারাসহ দেশটির কিছু লোক ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল এ ঘটনাকে ‘অত্যন্ত মর্যাদাহানিকর’ বলে বর্ণনা করেছে।
পুলিশমন্ত্রী কিট মল্টহাউস এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে ‘উচ্ছৃঙ্খল জনতা যা ইচ্ছা তাই করছে’ বলে সমালোচনা করেছেন।
অপরদিকে ব্রিস্টলের মেয়র মারভিন রিস সোমবার বিবিসিকে বলেছেন, “আমরা এমন একটি দেশে বাস করি যেখানে অন্যান্য লোকেরা অনুভব করছে তারা তাদের ইতিহাস ও আত্মপরিচয়ের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে, আমি মনে করি এটি একটি ত্রুটি।”
তিনি চ্যানেল ফোর টেলিভিশনকে বলেছেন, সামাজিক বিশৃঙ্খলা সমর্থন করেন না তিনি, কিন্তু সমাজ জটিল সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যার কোনো বাইনারি সমাধান নেই।