ভারত-শাসিত কাশ্মীরের প্রধান নগরী শ্রীনগরে নিরাপত্তা বাহিনী আরো ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
Published : 20 Aug 2019, 07:24 PM
মঙ্গলবার কর্মকর্তারা জানান, গত শনিবার শ্রীনগরের নানা জায়গায় বিক্ষোভের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উস্কানি রোধে সোমবার রাতভর নগরীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এ ৩০ জনকে আটক করা হয়।
গত ৫ অগাস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে কাশ্মীর অঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যদিও ভারত সরকার তার একদিন আগে থেকেই হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করে পুরো কাশ্মীর নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রেখেছে।
তারপরও মাঝেমধ্যেই স্থানীয়রা ভিড় করে বিক্ষোভ করছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে পাথর নিক্ষেপ করছে।
নগরীর সেসব স্থানে গত কয়েকদিনে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ওই সব স্থানে সোমবার রাতে অভিযান চালানো হয় বলে জানান নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা।
স্থানীয় সরকার থেকেও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নতুন করে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার ফলে ভারতের সব অঞ্চলের অধিবাসীরাই এখন সেখানে সম্পত্তি কিনতে পারবে এবং সরকারি চাকরির জন্যও প্রতিযোগিতায় নামতে পারবে। এতে বহিরাগতদের ঢল বাড়ার আশঙ্কায় আছে কাশ্মীরিরা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাশ্মীর সিদ্ধান্তের বিরোধিতার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে শ্রীনগরের সৌরা এলাকা। সেখানে অধিবাসীদের অধিকাংশই নরেন্দ্র মোদীকে ‘জালিম’ বা ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যা দিয়েছে।
এলাকাটির এক অধিবাসীর কথায়, “আমাদের কোনো কণ্ঠ নেই। আমাদের ভেতরে ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটছে।” গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে আছেন বলে জানান তিনি। তার উক্তি, “বিশ্বও যদি আমাদের কথা না শোনে তাহলে আমরা কি করব, বন্দুক হাতে তুলে নেব?”
কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত সরকারের ধরপাকড় এবং কড়াকড়ির মধ্যে কাশ্মীর অঞ্চলে খুবই সীমিত আাকারে কয়েক ডজন মানুষের ছোট ছোট বিক্ষোভ হচ্ছে বলে সোমবার জানিয়েছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ।
বাবা-মায়েরা সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকায় বাচ্চাদেরকে মঙ্গলবারও স্কুলে পাঠায়নি। রয়টার্সের সাংবাদিকরা শ্রীনগরের তিনটি স্কুলে পরিদর্শন করে কোনো ছাত্রছাত্রীকে দেখতে পাননি।
শিক্ষকরা ডিউটিতে আসলেও ক্লাসরুম ফাঁকা দেখে ফিরে গেছে বলে জানিয়েছেন স্কুলের কর্মকর্তারা। কর্তৃপক্ষ সোমবারেই সব স্কুল খোলা এবং বাস সার্ভিস চালুর নির্দেশ দিলেও এখনো সেখানে বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।
বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতিতে কেউই ঝুঁকি নিয়ে কাজে বেরোনোর সাহস করছে না বলে জানিয়েছেন এক বাস চালক।