নেদারল্যান্ডসে ট্রামের ভেতর গুলিতে নিহত ৩

নেদারল্যান্ডেসের ইউট্রেখট নগরীতে এক ব্যক্তি ট্রামের ভেতরে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে তিনজনকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছেন আরো নয়জন।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2019, 11:44 AM
Updated : 18 March 2019, 04:29 PM

ইউট্রেখটের মেয়রের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনওএস হতাহতের এ খবর জানিয়েছে। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান মেয়র ফন ভন জানীন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, হামলার জড়িত সন্দেহে গোকম্যান তানিস নামে ৩৭ বছরের এক তুর্কিকে খুঁজছে পুলিশ।

স্থানীয় সময় সোমবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে (০৯:৪৫) টোয়েন্টিফোর অক্টোবরপ্লেইন জংশনের কাছে গুলির এ ঘটনা ঘটে। ট্রামের ভেতর গুলি করার পর বন্দুকধারী গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। তাকে এখনো আটক করা সম্ভব হয়নি।

ঘটনাটিকে একটি ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে মনে করছে সন্ত্রাস-দমন পুলিশ। ইউট্রেখট নগরীতে অস্থায়ীভাবে সর্বোচ্চ সতর্কতা জরি করা হয়েছে।

নিরাপত্তার কারণে স্থানীয় প্রশাসন প্রাথমিকভাবে নগরীতে সব ধরনের ট্রেন ও ট্রাম চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। যদিও পরে কিছু কিছু যান চলতে শুরু করেছে।

নিরাপত্তা বিবেচনায় নগরীর বিদ্যালয়গুলোর সদর দরজা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। নগরীর মসজিদেও পুলিশ পাহারা বাড়ানো হয়েছে।

এ ঘটনার মাত্র তিনদিন আগে নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুইটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৫০ জন নিহত হয়। এখনো গুলিবিদ্ধ প্রায় ৩৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ব্রেন্টন ট্যারেন্ট নামে এক অস্ট্রেলীয়  উগ্র বর্ণবাদী একাই দুই মসজিদে বন্দুক হাতে হামলা চালিয়ে এত মানুষকে হতাহত করে।

পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে, নিউ জিল্যান্ডের আদালতে তার বিচার শুরু হয়েছে।

সোমবারের এ হামলায় নেদারল্যান্ডেসের প্রধানমন্ত্রী মাখ রুত্তে ‘গভীর শোক’ প্রকাশ করে বলেন, “ইউট্রেখটে আজকের হামলায় পুরো দেশ শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে….সন্ত্রাসী এ মনোভাবকে বাড়তে দেওয়া যাবে না।”

“নিষ্পাপ মানুষজন নৃশংসতার শিকার হচ্ছে। এ হামলা পরিকল্পনাকারী বা পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত খুঁজে বের করতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। এটাই এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।”

সন্দেহভাজন তুরস্ক বংশোদ্ভূত তানিসের অপরাধের লম্বা ইতিহাস আছে বলে জানায় স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভি ইউট্রেখট।

চ্যানেলটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তি ছোট-বড় বেশ কয়েকটি অপরাধ করেছে, যার মধ্যে ২০১৩ সালে বন্দুক হাতে হামলার ঘটনাও আছে। পুলিশ তাকে খুঁজছে। যদিও এ বিষয়ে পুলিশের মুখপাত্র ইয়োস্ত লনসাখে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

হামলার পরপর এনওএসকে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছিলেন, তিনি একজন আহত নারীকে দেখেছেন। তার হাতে এবং কাপড়ে রক্ত ছিল।

“আমি তাকে আমার গাড়িতে করে নিয়ে আসি। যখন পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে তখন তার জ্ঞান ছিল না।”

নেদারল্যান্ডেসের চতুর্থ বৃহৎ নগরী ইউট্রেখটে তিন লাখ ৪০ হাজার মানুষ বসবাস করে। সোমবার নগরীর কানালআইল্যান্ড জেলার যে এলাকায় ট্রামে গুলির ঘটনা ঘটে সেটি বেশ নিরিবিলি আবাসিক এলাকা, অভিবাসীরাই সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ।