মিয়ানমারে আটক রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে যোগ দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার আইনজীবী আমাল ক্লুনি।
Published : 30 Mar 2018, 01:22 PM
বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে ক্লুনির কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে এ খবর জানান হয়।
‘বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়ার জন্য ইচ্ছা করে অবৈধভাবে সরকারি গোপন তথ্য সংগ্রহ করছিলেন’ অভিযোগে গতবছর ১২ ডিসেম্বর রয়টার্সের দুই সাংবাদিক কো ওয়া লোন (৩১) এবং কিয়াও সোয়ে ও (২৮) কে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের বিচার ঔপনিবেশিক আমলের দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইনের (অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট-১৯২৩) অধীনে হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জানুয়ারি থেকে মিয়ানমারের একটি আদালতে প্রাথমিক শুনানি শুরু হয়।
অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট-১৯২৩’র অধীনে সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের কারাদণ্ড।
২০১৬ সালে রয়টার্সে যোগ দেওয়া ওয়া লোন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সংকটসহ আরও বিভিন্ন ধরনের সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। আর কিয়াও সোয়ে গতবছর সেপ্টেম্বর থেকে রয়টার্সের প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করছেন।
সর্বশেষ তারা রাখাইনের ইন দিন গ্রামে সেনা অভিযানে ১০ রোহিঙ্গা হত্যার ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন।
জানুয়ারিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ওই ১০ রোহিঙ্গাকে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেছে, নিহতরা ‘নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক’ ছিলেন।
বৃহস্পতিবারের বিবৃতিতে ক্লুনি বলেন, “শুধুমাত্র ওই খবর ( রাখাইনে রোহিঙ্গাদের খবর) দেওয়ার কারণে ওয়া লোন এবং কিয়াও সোয়ে ওর বিচার চলছে। আমি তাদের মামলার কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ করেছি। ওই দুই সাংবাদিক নিরপরাধ, এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশই নেই। তাদের দ্রুত মুক্তি দেওয়া উচিত।
“এই মামলার ফলাফল মিয়ানমার সরকারের দেওয়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও বাকস্বাধীনতার প্রতিশ্রুতির প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অনেক কিছু বলবে।”
মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হতাই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে এর আগে দুই সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, এটা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ নয়।
গতমাসে জাতিসংঘে মিয়ানমারের দূত হাউ দো সুয়ান বলেছিলেন, সংবাদ প্রতিবেদনের জন্য রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বরং সরকারি গোপন নথি অবৈধভাবে নিজেদের কাছে রাখার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে।”
গত বুধবার দুই সাংবাদিকের আইনজীবী আদালতের কাছে এই মামলা খারিজের আবেদন করেছেন।
তারা আদালতকে বলেন, দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের জন্য যেসব প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে তা অপর্যাপ্ত।
ইয়াংগুন জেলা আদালতে আগামী ৪ এপ্রিল মামলা খারিজের শুনানি হবে।