উত্তর কোরিয়া থেকে লৌহ, সিসা, কয়লা ও সামুদ্রিক খাবার আমদানি নিষিদ্ধ করেছে চীন।
Published : 14 Aug 2017, 07:52 PM
‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ জানায়, সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার থেকে এ বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
উত্তর কোরিয়ার উপর নতুন করে আরোপ করা জাতিসংঘের কঠোর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে চীন এ উদ্যোগ নিয়েছে।
তাছাড়া, জাতিসংঘের অনুমতিতে উত্তর কোরিয়ার রাসন বন্দর দিয়ে সরবরাহ হওয়া তৃতীয় কোনও দেশের পন্য আমদানিও চীন নিষিদ্ধ করেছে।
একই সময়ে ‘চীনকে চাপে ফেলতে’ উসকানিমূলক বাণিজ্য নীতি গ্রহণের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে সতর্কও করেছে বেইজিং।
ট্রাম্প সোমবার চীনের বিরুদ্ধে একটি নির্বাহী স্মারক সই করতে পারেন এমন আশঙ্কার মাঝে চীন ওই সতর্কবার্তা দিয়েছে।
ট্রাম্পের ওই পদক্ষেপের ফলে চীনকে বড় ধরনের জরিমানা গুণতে হতে পারে।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়ান চুনিইং বলেছেন, “একটি বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করতে অন্য একটি বিষয়কে ব্যবহার করা নিশ্চিয়ই ঠিক না।”
“বাণিজ্য যুদ্ধে আসলে কেউই জেতে না, এখানে একমাত্র ফল হার।”
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব একটি দৈনিকের সম্পাদকীয়তে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া বিষয়ে চীনের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটু বেশিই আশা করছেন।
“বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ে ট্রাম্পের আদান-প্রদাণ পদ্ধতি অসহযোগিতামূলক।”
“বাণিজ্যকে রাজনীতির হাতিয়ার বানানো শুধুমাত্র তাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) অর্থনৈতিক দুর্দশার কথাই বলবে এবং একই সঙ্গে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের সম্পর্ককে বিষাক্ত করে তুলবে।”
“আশা করি উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র প্রকল্প নিয়ন্ত্রণের অন্য কোনো পথ খুঁজে বের করবেন ট্রাম্প। যদি বেইজিং-ওয়াশিংটন আবারও মুখোমুখি অবস্থানে চলে আসে তবে পরিস্থিতি কেবল আরও জটিলই হবে।”
বিশ্বের সঙ্গে প্রায় বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী মিত্র চীন। দেশটির বাণিজ্য প্রায় ৯০ শতাংশই চীনের উপর নির্ভরশীল।
এ বছর ফেব্রুয়ারিতে উত্তর কোরিয়া থেকে কয়লা আমদানি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছিল চীন।
উত্তর কোরিয়ার রপ্তানি আয়ের প্রায় ৫০ শতাংশই আসে কয়লা থেকে। ফেব্রুয়ারিতে এক বছরের জন্য কয়লা আমদানি বন্ধ করলেও উত্তর কোরিয়া থেকে অন্যান্য পণ্য যথা নিয়মে চীনে যাচ্ছিল।
কিন্তু চীনের নতুন আমদানি নিষেধাজ্ঞায় লৌহ, সিসা ও সামুদ্রিক খাবারও যুক্ত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বিপদে পড়বে পিয়ংইয়ং।
তবে এত কিছুর পরও পিয়ংইয়ংকে তাদের পরমাণু অস্ত্র প্রকল্প থেকে সরিয়ে আনা সম্ভব হবে না বলেই ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
চীনও তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র উত্তর কোরিয়াকে এভাবে চাপ প্রয়োগের পক্ষে নয়। বরং তারা যুক্তরাষ্ট্রকে বারবার আলোচনায় বসার আহ্বান জানাচ্ছে।