যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা না থাকা নিয়ে দেশটিতে ফের গণভোট আয়োজনের পক্ষে একটি আবেদনে ১৩ লাখের বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছে।
Published : 25 Jun 2016, 09:54 PM
আবেদনটি বিবেচনার জন্য এখন পার্লামেন্টে উঠবে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়। কোনো আবেদনে এক লাখের বেশি মানুষের সমর্থন দিলে তা পার্লামেন্টে তোলা হয়।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পক্ষে রায় এসেছে। ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট পড়েছে ৫২ শতাংশ, আর থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন সাড়ে ৪ কোটি ভোটারের ৪৮ শতাংশ। তবে লন্ডন, স্কটল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ডের বেশিরভাগ ভোটার ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেয়।
গণভোটে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত আসার পরপরই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে প্রচার চালিয়েছিলেন তিনি।
এ প্রেক্ষাপটে উইলিয়াম অলিভার হেলি নামের এক ব্যক্তি অনলাইনে ওই আবেদন (পিটিশন) করেছেন।
এতে বলা হয়, “আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীরা যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে এমন একটি আইন জারি করার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে গণভোটে থাকা বা না থাকার পক্ষে ৬০ শতাংশের কম ভোট পড়লে এবং ভোট পড়ার হার ৭৫ শতাংশের কম হলে আবারও গণভোট হবে।”
বৃহস্পতিবার ভোটের হার ছিল ৭২ দশমিক ২ শতাংশ, যা গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে ভোটের হার ৬৬ দশমিক ১ শতাংশের বেশি।
এর আগে ২০১৪ সালে যুক্তরাজ্য থেকে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোটে ৮৪ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন, যদিও ১৯৯২ সালের পর থেকে সেখানে কোনো সাধারণ নির্বাচনে ৭৫ শতাংশের ওপর ভোট পড়েনি।
আবেদনটিতে ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৭৬৯ জন স্বাক্ষর করেন।
আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় কোনো একটি পিটিশনে একইসঙ্গে এতো মানুষ অংশ নেয়নি জানিয়ে হাউজ অফ কমন্সের এক মুখপাত্র বলেন, এতে পিটিশন সাইটটি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের পিটিশন ব্যবস্থা তদারকিতে একটি কমিটি রয়েছে। কোনো পিটিশনে এক লাখের বেশি স্বাক্ষর হলে সেটা হাউজ অব কমন্সে উপস্থাপন এবং তা নিয়ে বিতর্ক হয়।
মঙ্গলবার পিটিশন কমিটির বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
এদিকে অন্য এক পিটিশনে লন্ডনের মেয়র সাদিক খানকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে ইইউ-র সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এক লাখের বেশি মানুষ ওই পিটিশনে স্বাক্ষর করেছে।
জেমস ও’মেলি নামের এক ব্যক্তি ওই পিটিশন করেছেন।
পিটিশনে বলা হয়, “লন্ডন একটি আন্তর্জাতিক শহর এবং আমরা ইউরোপের কেন্দ্রস্থল হয়ে থাকতে চাই।”
লন্ডনে ৩৩টি পৌরসভার সবগুলোতেই ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে বেশি ভোট পড়েছে। তার মধ্যে কয়েকটিতে ৭০ শতাংশের বেশি ভোটার থেকে যাওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে।
আর সব মিলিয়ে লন্ডনে গড়ে ৫৯ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট থেকে যাওয়ার পক্ষে পড়েছে।