সিরিয়ায় দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধে সেনা সঙ্কটে কাবু হয়ে পড়ার কথা স্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ।
Published : 26 Jul 2015, 10:58 PM
জনবলের অভাবে সিরিয়ার সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কয়েকটি জায়গা পুনর্দখলের লড়াই চালাতে গিয়ে অন্যান্য এলাকা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গৃহযুদ্ধের পঞ্চম বছর পার করছে সিরিয়া। এ যুদ্ধে ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে এবং লাখ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন আর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
সিরিয়ার সামরিক বাহিনী একসময় ৩ লাখ সেনার শক্তিশালী বাহিনী ছিল। কিন্তু লড়াইয়ে বহু সেনার মৃত্যু এবং সরকার পক্ষত্যাগের কারণে সেনাসংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে।
প্রেসিডেন্ট আসাদ বলেন, গোটা দেশের সুরক্ষার জন্য সামরিক বাহিনীতে জনবল নেই। আর বিশেষত, বিদ্রোহীরা বাইরের দেশগুলো (সৌদি আরব, তুরস্ক ও কাতার) থেকে বেশি বেশি সমর্থন পাচ্ছে।
দামেস্কে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উদ্দেশে টিভিতে প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন, “কোনো কোনো পরিস্থিতিতে আমরা কখনো কখনো কিছু কিছু এলাকায় লড়াই চালানোর জন্য অন্য অনেক জায়গা থেকেই সেনাদের সরিয়ে আনতে বাধ্য হচ্ছি। যে জায়গাগুলো আমরা দখলে রাখতে চাই।”
আসাদ আরো বলেন, “আমাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সশস্ত্র বাহিনীকে সে জায়গা ধরে রাখার জন্য নিয়োজিত করতে হচ্ছে যাতে বাকি এলাকাগুলোর পতন না ঘটে।”
লেবানন থেকে বিবিসি’র এক সংবাদদাতাও সিরিয়া সরকারের সেনাসঙ্কটে ভোগার বিষয়টি স্পষ্টতই ধরা পড়ছে বলে জানিয়েছেন।
এবছর সিরিয়ার সেনাবাহিনী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর সঙ্গে লড়াইয়ে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রাদেশিক রাজধানী ইদলিব, দক্ষিণের কিছু এলাকা এবং উত্তর-পূর্বের পালমিরা শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।
আসাদ বলছেন, সেনাবাহিনী এখনো দামেস্ক, হামা, হোমস এর মত গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
কিন্তু উত্তরের আলেপ্পোসহ দক্ষিণের দেরার মত বড় শহরগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংবাদদাতারা।
তবে এ সঙ্কটাপন্ন পরিস্থিতিতেও আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের শান্তিপূর্ণ অবসানের চেষ্টা চালানোর সম্ভাবনা নাকচ করে আসাদ বরং লড়াই চালিয়ে যাওয়ারই অঙ্গীকার করেছেন।
“সিরিয়ার সেনাবাহিনীতে পরাজয় বলে কোনো শব্দ নেই। আমরা প্রতিরোধ লড়াই চালিয়ে যাব এবং জিতব”, বলেন তিনি।