হ্যানয়ের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া লোহিত নদীর পানি বেড়ে ২০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে।
Published : 12 Sep 2024, 05:13 PM
টাইফুন ইয়াগির আঘাতে ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি, বন্যা আর ভূমিধসে মৃত্যু বেড়ে ১৯৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
এখনো পর্যন্ত ১২৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন; আহতের সংখ্যা প্রায় ৮০০ জন বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
টাইফুন ইয়াগিকে চলতি বছর এশিয়ায় আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বলা হচ্ছে। ভিয়েতনামে এ ঝড়ের তাণ্ডব চলছে গত শনিবার থেকে।
আবহাওয়া সংস্থার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, পানির স্রোতে বাঁধ ভেঙে নদী তীরবর্তী ও নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। হ্যানয়সহ উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য প্রদেশের কিছু অংশ এখনো হুমকির মুখে।
শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া লোহিত নদীর পানি বেড়ে ২০ বছরের রেকর্ড ভাঙার পর রাজধানী হ্যানয়ের রাস্তাগুলো ডুবে গেছে। বুধবার হ্যানয়ের নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোর কয়েক হাজার বাসিন্দাকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে লোহিত নদীর পানির স্তরে সামান্য পরিবর্তনের পূর্বাভাস দিয়ে আবহাওয়া সংস্থা।
ব্লু ড্রাগন চিলড্রেনস ফাউন্ডেশনের সহ-প্রধান নির্বাহী স্কাই ম্যাকোনাচি বলেন, “শহরে পানি বাড়তে থাকায় সবাই খুব উদ্বিগ্নে দিন পার করছে। বন্যার কবলে পড়ে মানুষ তাদের সর্বস্ব হারিয়েছে।”
তিনি বলেন, মানুষের আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে অনেক সময় লাগবে।
ফিলিপিন্স ও চীনের হাইনান দ্বীপে তাণ্ডব চালানোর পর শনিবার ভিয়েতনামের উত্তর উপকূল দিয়ে স্থলে উঠে আসে টাইফুন ইয়াগি। এরপর থেকে পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে হ্যানয়ের উপর প্রবল ঝড় ও ভারি বৃষ্টি ঝরায়। সোমবার ফু থো প্রদেশে লোহিত নদীর ওপর দিয়ে যাওয়া ফং চাউ সেতু ধসে পড়ে।
থাই নগুয়েন প্রদেশের বাসিন্দা হোয়াং ভ্যান টাই বলেন, “আমি কখনোই ভাবিনি আমার বাড়ি এভাবে তলিয়ে যাবে।”
তিনি বলেন, "আমার জামাকাপড়, আসবাবপত্র সব পানির নিচে পড়ে আছে। অনেক কিছুই ভেসে যাচ্ছিল, কিন্তু ভাগ্যক্রমে আমি দরজা বন্ধ করে দেওয়ায় সবটা ভেসে যায়নি।”
ভিয়েতনাম নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, আকস্মিক বন্যায় লাও কাই প্রদেশের নু গ্রামে গ্রামের ৪৬ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছেন। ৩০০ সেনা এবং ৩৫৯ জন স্থানীয় কর্মকর্তা ওই গ্রামে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভূমিধস ও বন্যায় ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে দুই লাখ হেক্টরের বেশি ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে।
প্রতিকূল আবহাওয়ায় বিদ্যুৎ-বিভ্রাটে বিপাকে পড়েছে ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন কারখানার কর্তৃপক্ষ। এই অঞ্চলে স্যামসাং ও ফক্সকনের মতো প্রযুক্তি কোম্পানির কারখানা রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ ভিয়েতনামে ত্রাণ পাঠানোর কথা জানিয়েছে।