শনিবার রাতভর আকাশ ও স্থলপথে ভারি বোমা হামলার পর উত্তর গাজার জাবালিয়ায় ট্যাংক পাঠিয়েছে ইসরায়েল।
Published : 12 May 2024, 07:19 PM
গাজার উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে আবারও ট্যাংক পাঠিয়েছে ইসরায়েল। শনিবার রাতভর আকাশ ও স্থলপথে ভারি বোমা হামলার পর রোববার ভোরে সেখানে ট্যাংক পাঠায় দেশটি।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবারের হামলায় ১৯ জন নিহত এবং আরও কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছে।
গাজার আটটি ঐতিহাসিক শরণার্থী শিবিরের মধ্যে সবচেয়ে বড় জাবালিয়া। সেখানে ১ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিন আশ্রয় নিয়ে আছে।
তাদের অধিকাংশই ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ইসরায়েলের শহর ও গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন।
শনিবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, জাবালিয়ায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাসকে তাদের সামরিক সক্ষমতা পুনর্প্রতিষ্ঠা করায় বাধা দিচ্ছে সেনারা।
একটি সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, “গত কয়েক সপ্তাহ আমরা জাবালিয়ায় হামাসের সামরিক সক্ষমতা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা শনাক্ত করেছি। সেই চেষ্টা নির্মূলে সেখানে কাজ করছি আমরা।”
গাজা সিটির জেইতুন জেলায় অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী প্রায় ৩০ ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করেছে বলেও জানান হাগারি।
জাবালিয়ার বাসিন্দা ৪৫ বছর বয়সী সায়েদ একটি চ্যাট অ্যাপের মাধ্যমে রয়টার্সকে বলেছেন, “গতকাল থেকে আকাশ ও স্থলপথে বোমাবর্ষণ বন্ধ হয়নি। সবখানেই বোমাবর্ষণ করছিল তারা। এর মধ্যে, বিদ্যালয়ের কাছাকাছি থাকা বাস্তুচ্যুতদের আবাসস্থলও ছিল।”
“যুদ্ধ আবার শুরু হচ্ছে। জাবালিয়ার পরিস্থিতি দেখে এমনই মনে হচ্ছে,” বলেন তিনি।
ইসরায়েলি সেনাদের নতুন অনুপ্রবেশের কারণে অনেক পরিবারই অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলীয় উপশহর আল-জেইতুন এবং আল-সাবরাতে আবারও ট্যাংক পাঠিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
সেখানকার বাসিন্দারা ভারি বোমা হামলার খবর জানিয়েছেন। হামলায় অনেক বহুতল আবাসিক ভবনসহ বেশ কয়েকটি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
কয়েক মাস আগে এসব এলাকার বেশিরভাগের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার দাবি করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী।
রোববার রাফাতেও হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েলি সেনারা। গোটা নগরীতেই ইসরায়েল ট্যাংক থেকে বোমাবর্ষণ করছে। হামলা থেকে বাঁচতে হাজারো মানুষ রাফা ছেড়ে যাচ্ছে।
এর মধ্যেই রাফার আরও এলাকা থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। এর মধ্য দিয়ে রাফায় আরও বড় ধরনের অভিযানের ইঙ্গিত দিয়েছে দেশটি।
আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে গত সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনারা পূর্ব রাফায় প্রবেশ করেছে। এতে গাজায় মানবিক ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।