Published : 16 Dec 2024, 05:16 PM
অধিকৃত গোলান মালভূমিতে বসতি সম্প্রসারণ উৎসাহিত করতে একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইসরায়েল সরকার।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছিল। কারণ,বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের সীমান্তে একটি ‘নতুন ফ্রন্ট’ খুলে গেছে।
গোলান মালভূমিতে জনসংখ্যা দ্বিগুণ করতে চান বলেও জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধের পর ইসরায়েল গোলান মালভূমি দখল করেছিল। আন্তর্জাতিক আইনে ইসরায়েলের এই দখলদারিত্ব অবৈধ।
বিদ্রোহীদের ঝড়ো আক্রমণের মুখে বাশার আল আসাদ সিরিয়া ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী গোলান মালভূমির অসামরিক এলাকায় (বাফার জোন) ঢোকে। এই অঞ্চল সিরিয়া থেকে গোলান মালভূমিকে পৃথক করেছে।
১৯৭৪ সালে সিরিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের হাতে দেশটির নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ার কারণে তা ‘ভেঙে পড়েছে’ বলে যুক্তি দেখিয়ে গোলানের বাফার জোনে ঢোকে ইসরায়েলি বাহিনী।
তবে এমন পদক্ষেপের পরও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলছেন, তার দেশ সিরিয়ার সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে আগ্রহী নয়। তিনি বলেন, “আমরা বাস্তবতার নিরিখে সিরিয়া বিষয়ক নীতি নির্ধারণ করব।”
গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলের ৩০টির বেশি বসতি রয়েছে। সেখানে আনুমানিক ২০ হাজার মানুষের বাস। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এ বসতি অবৈধ। তবে ইসরায়েল তা মানে না।
গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলি বসতিতে ইসরায়েলিদের পাশাপাশি প্রায় ২০ হাজার সিরীয় বাস করে। তারা মূলত দ্রুজ আরব। ইসরায়েল ওই অঞ্চলের দখল নেওয়ার সময় দ্রুজ আরবরা নিজেদের বসতি ছেড়ে যায়নি।
নেতানিয়াহু বলেন, “ইসরায়েল ওই অঞ্চলের দখল ধরে রাখবে, এলাকাটিকে সমৃদ্ধ করবে এবং স্থিতিশীল রাখবে।" তবে গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলি বসতি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই মনে করছেন সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট।
বিবিসি-কে ওলমার্ট বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, আমরা সিরিয়ার সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চাই না। আর আমরা আশা করছি বর্তমানে সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া নতুন বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করার দরকার হবে না। তাহলে আমরা কেন ঠিক এর বিপরীত কাজ করছি? আমাদের যথেষ্ট সমস্যা রয়েছে যেগুলো সমাধান করতে হবে।”
নেতানিয়াহুর বসতির দখল ধরে রাখা নিয়ে বক্তব্যের কয়েক দিন আগে সিরিয়ার ডি-ফ্যাক্টো নেতা আহমেদ আল-শারা ওরফে আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি তার দেশের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েলের হামলার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের হিসাবমতে, ৮ ডিসেম্বর থেকে সিরিয়ায় সাড়ে ৪ শ'র বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তার মধ্যে ৭৫টি হামলা চলে গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে।
ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে আল-জুলানি বলেছেন, এসব হামলা চালিয়ে ইসরায়েল সীমা অতিক্রম করছে এবং অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। তবে তিনিও বলেন, সিরিয়া প্রতিবেশী কোনও দেশের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না।