ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক সফরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে থাকাকালেই সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
Published : 04 Feb 2025, 12:44 PM
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সঙ্গে তার দেশের সম্পক্তৃতা এবং জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-র তহবিল দেওয়া বন্ধ রাখার পদক্ষেপ নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা এসব কথা জানিয়েছেন বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
এই পদক্ষেপ এমন এক সময় নেওয়া হচ্ছে যখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ানিমন নেতানিয়াহু এক সফরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আছেন। নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরে ইউএনআরডব্লিউএ এর সমালোচনা করে আসছেন। ইসরায়েলবিরোধী উস্কানির জন্য সংস্থাটিকে অভিযুক্ত করার পাশাপাশি সংস্থাটির কর্মীরা ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িত’ বলে অভিযোগ তার।
রয়টার্স জানায়, জাতিসংঘ ও ইউএনআরডব্লিউএ তাদের মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
২০১৭ থেকে ২০২১ পর্যন্ত হোয়াইট হাউজের প্রথম মেয়াদ চলাকালেও ট্রাম্প ইউএনআরডব্লিউএ এর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংস্থাটিকে সংস্কার করার আহ্বান জানিয়ে তহবিল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি আলোচনা নতুন করে শুরু করার জন্য ফিলিস্তিনিদের রাজি হওয়া দরকার।
ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসন তাদের তিন বছর মেয়াদী সদস্য পদের মাঝামাঝি জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল থেকেও বের হয়ে গিয়েছিল। ৪৭ সদস্য রাষ্ট্রের কাউন্সিল দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধতা করছে, এমন অভিযোগ তুলেছিল তৎকালীন মার্কিন প্রশাসন। কাউন্সিলের সংস্কারের অভাব বলেও মন্তব্য করেছিল তারা।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র জেনিভাভিত্তিক এই পরিষদটির সদস্য নয়। ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র পরিষদটিতে পুনর্নির্বাচিত হয়ে ২০২২ থেকে ২০২৪ মেয়াদে দায়িত্বপালন করেছে।
অগাস্টে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের একটি ওয়ার্কিং গ্রুপের যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখার কথা রয়েছে। কয়েক বছর পর পর প্রত্যেকটি দেশকে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এ প্রক্রিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো প্রমাণ মিললেও কাউন্সিলের আইনি কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা নেই।
তবে কাউন্সিলের তোলা বিতর্কের রাজনৈতিক প্রভাব আছে। এক্ষেত্রে ওঠা সমালোচনার কারণে সরকারগুলোর ওপর তাদের গতিধারা পরিবর্তনে বৈশ্বিক চাপ তৈরি হতে পারে।
২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণ করেই ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বের করে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। ক্ষমতার প্রথম মেয়াদেও ট্রাম্প এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র ইউএনআরডব্লিউএ-র সবচেয়ে বড় দাতা ছিল। বছরে ৩০ থেকে ৪০ কোটি ডলার দিতো দেশটি। কিন্তু ৭ অক্টোবর, ২০২৩ এ হামাসের চালানো হামলায় প্রায় ডজনের মতো ইউএনআরডব্লিউএ-র কর্মী অংশ নিয়েছে, ইসরায়েল এমন অভিযোগ করার পর ২০২৪ এর জানুয়ারিতে বাইডেন প্রশাসন সংস্থাটিতে তহবিল দেওয়া স্থগিত করে।
এরপর মার্কিন কংগ্রেস অন্তত ২০২৫ এর মার্চ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএনআরডব্লিউএ-কে তহবিল দেওয়া স্থগিত করে।
ইউএনআরডব্লিউএ গাজা, পূর্ব জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীর, সিরিয়া, লেবানন ও জর্ডানে থাকা লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে ত্রাণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবা দিয়ে আসছে।