সিরিয়ায় গত কয়েকবছরে এ নিয়ে ৫ টি গণকবরের সন্ধান পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক একটি সিরীয় সংগঠনের প্রধান।
Published : 17 Dec 2024, 03:48 PM
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক সংগঠন ‘সিরিয়ান এমার্জেন্সি টাস্ক ফোর্স’এর প্রধান মুয়াজ মোস্তফা জানিয়েছেন, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কর বাইরে একটি গণকবরেই অন্তত এক লাখ মানুষের মরদেহ পাওয়া গেছে।
ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের শাসনামলে এসব মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। গত ৮ ডিসেম্বরে সিরীয় বিদ্রোহীদের ঝড়ো অভিযানের মুখে আসাদ সরকারের পতন হয়। আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
এরপরই সিরিয়ায় গিয়ে সাংবাদিকদেরকে গণকবরের সন্ধান দিলেন ‘সিরিয়ান এমার্জেন্সি টাস্ক ফোর্স’এর প্রধান মুয়াজ মোস্তফা। তিনি বলেন, দামেস্ক থেকে ৪০ কিলোমিটার (২৫ মাইল) উত্তরে আল কুতেইফাহ এলাকায় গণকবরটি পাওয়া গেছে।
গত কয়েক বছরে এলাকাটিতে যে পাঁচটি গণকবরের সন্ধান তিনি পেয়েছেন, এটি তারই একটি। মোস্তফার হিসাবমতে, এই গণকবরে কম করে হলেও অন্তত একলাখ মানুষকে পুঁতে ফেলা হয়েছে।
তবে সিরিয়ায় পাঁচটি ছাড়াও আরও অনেক গণকবর আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব গণকবরে নির্যাতনের শিকার সিরীয় নাগরিকরা ছাড়াও বিদেশিরা আছে।
আল-জাজিরা জানায়, ২০১১ সাল থেকে হাজার হাজার সিরীয় নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। কারণ, সে সময় সিরিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ দমাতে খড়্গহস্ত হয়েছিলেন বাশার আল–আসাদ।
সেই বিক্ষোভ আর শক্তি প্রয়োগ করে আসাদের তা দমনের অভিযান পরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়।
বাশার আল–আসাদের বাবা হাফিজ আল–আসাদ দীর্ঘদিন সিরিয়া শাসন করেছিলেন। ২০০০ সালের বাবার মৃত্যুর পর প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন বাশার আল–আসাদ। তিনিও দীর্ঘ ২৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন।
বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে বিনাবিচারে মানুষ হত্যা, গণহারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, কারাগারে আটকে রেখে নির্যাতনের মতো গুরুতর অনেক অভিযোগ আছে। তবে আসাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।
মুস্তফা জানান, নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাওয়াদের মরদেহ সামরিক হাসপাতালগুলোতে সংগ্রহ করা হত। পরে সেসব মরদেহ নেওয়া হতো গণকবরে। একাজের দায়িত্ব ছিল সিরিয়ার বিমানবাহিনীর।
তিনি বলেন, “আমরা এমন কয়েকজন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছিলাম, যারা এসব গণকবরে কাজ করেছিলেন।” তার সংগঠন কবর খোঁড়ার কাজ করা বুলডোজার চালকদের সঙ্গেও কথা বলেছে বলে জানান তিনি।
তবে গণকবরের স্থানগুলো অরক্ষিত পড়ে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুস্তাফা। তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে প্রমাণাদি সংরক্ষণের জন্য গণকবরগুলো সুরক্ষিত রাখা জরুরি।