ইব্রাহিম রাইসির মতই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ মোখবার হতে পারেন দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট।
Published : 20 May 2024, 12:48 PM
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে সংবিধান অনুযায়ী ইরানি অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হতে পারেন দেশটির প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার।
ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের সংবিধানের ১৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দায়িত্বরত কোনো প্রেসিডেন্ট মারা গেলে ভাইস প্রেসিডেন্ট দায়িত্বগ্রহণ করবেন। ফলে নিয়ম অনুযায়ী ৬৮ বছর বয়সী মোখবারই অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা।
রোববার আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি প্রকল্প উদ্বোধনের পর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শহর তাবরিজে ফেরার পথে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গেছেন রাইসি এবং তার সফরসঙ্গীরা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দোল্লাহিয়ানও আছেন তাদের মধ্যে। ঘন কুয়াশার মধ্যে হেলিকপ্টারটি পার্বত্যাঞ্চলে দুর্ঘটনায় পড়ে।
দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় কোনো প্রেসিডেন্ট মারা গেলে ৫০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে নির্বাচন আয়োজন করে থাকে ইরানের তিন সদস্যের একটি পরিষদ। সেখানে প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোখবার ছাড়াও রয়েছেন পার্লামেন্টের স্পিকার ও বিচার বিভাগের প্রধান।
ইব্রাহিম রাইসির মতই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ মোখবার জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর। ২০২১ সালে তিনি প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট হন। আর রাইসি সেসময় হন প্রেসিডেন্ট।
রয়টার্স লিখেছে, গত বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার মস্কোয় যে কজন ইরানি কর্মকর্তা সফর করেন, তাদের একজন ছিলেন মোখবার। সেসময় রুশ সেনাবাহিনীকে ভূমি থেকে ভূমিকে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ও আরও বেশি ড্রোন সরবরাহের ব্যাপারে তারা সম্মত হন। ইরানের বিপ্লবী গার্ডের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক কর্মকর্তাও ওই সফরে ছিলেন।
এর আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বিনিয়োগ ফান্ড ‘সেতাদ’ এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোখবার।
পারমাণবিক বা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০১০ সালে ইরানের অন্যান্য কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোখবারকেও নিষেধাজ্ঞা তালিকায় রেখেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে দুই বছর পর ওই তালিকা থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়।
২০১৩ সালে সেতাদ ও ইরানের ৩৭টি কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।
বিনিয়োগ ফান্ড সেতাদের পুরো নাম ‘সেতাদ ইজরায়ে ফরমানে হযরতে এমাম’, যার মানে ইমামের আদেশ কার্যকরের সদরদপ্তর। আলী খামেনির পূর্বসূরী ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি এটি প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লবের পরে বিশৃঙ্খল বছরগুলোতে পরিত্যক্ত সম্পত্তি বিক্রি ও ব্যবস্থাপনার আদেশ দেয় সেতাদ। সেগুলোর বেশিরভাগ দাতব্য সংস্থায় দেওয়া হয়।
আরও খবর:
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানি প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যু