কৃষ্ণ সাগরে ফের নজরদারি ড্রোন ফ্লাইট শুরু যুক্তরাষ্ট্রের

কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে একটি আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক ড্রোন উড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র মিশন আবার নজরদারি মিশন শুরু করেছে। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2023, 04:54 AM
Updated : 18 March 2023, 04:54 AM

রাশিয়ার জঙ্গি বিমানের বাধার মুখে একটি মার্কিন নজরদারি ড্রোন পানিতে পড়ে ডুবে যাওয়ার ঘটনার পর কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ফের নজরদারি ড্রোন ফ্লাইট চালু করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির দুই কর্মকর্তা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ওই মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার ওই অঞ্চলে একটি আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক উড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র মিশন আবার শুরু করেছে।  

কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন জানান, নজরদারি ড্রোন সংক্রান্ত মঙ্গলবারের ওই ঘটনার পর এটিই এ ধরনের প্রথম ফ্লাইট।  

মঙ্গলবারের ওই ঘটনার পর থেকেই পেন্টাগনের কর্মকর্তারা বারবার জোর দিয়ে বলে আসছিলেন, একটি নজরদারি ড্রোন হারানোর পরও ওয়াশিংটন এ ধরনের মিশন বন্ধ করবে না।

ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন এমকিউ-৯ নজরদারি ড্রোন ডুবিয়ে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যে ঘটা প্রথম সরাসরি ঘটনা। এ ঘটনায় ওয়াশিংটন ও মস্কো প্রকাশ্যে একে অপরকে দায়ী করেছে, এতে দুইপক্ষের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ঘটনার সময় রাশিয়ার দুটি এসইউ-২৪ জঙ্গি বিমান মার্কিন মানুষবিহীন আকাশযানটির চারপাশে বেপরোয়াভাবে উড়াউড়ি করেছে। রাশিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করে কয়েকবার ‘তীক্ষ্ণ বাঁক নেওয়ার পর’ ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে।

দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যে বৃহস্পতিবার পেন্টাগন একটি ভিডিও প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, রাশিয়ার একটি এসইউ-২৭ জঙ্গি বিমান ড্রোনটির খুব কাছে এসে জ্বালানি তেল ছেড়ে দিচ্ছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, মার্কিন ড্রোনটি উড়ার সময় এটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই রুশ জঙ্গি বিমানটি এমন করেছে। 

আরেকটি রুশ জঙ্গি বিমান কাছ দিয়ে উড়ে যাওয়ার পর ড্রোনটির ভিডিও ফিড বন্ধ হয়ে যায়, এমনটিও দেখা গেছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে। পেন্টাগন বলেছে, রাশিয়ার একটি জঙ্গি বিমানের সঙ্গে ড্রোনটির সংঘর্ষের ফলে ঘটনাটি ঘটেছে।

ড্রোনটির ক্ষতিগ্রস্ত প্রপেলারের কয়েকটি ছবি আসার পর ভিডিওটি বন্ধ হয়ে যায়। পেন্টাগনের অভিযোগ, ওই সংঘর্ষের ফলেই প্রপেলারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এতে ড্রোনটি অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং এর দূরবর্তী চালকরা ড্রোনটিকে কৃষ্ণ সাগরের পানিতে ফেলে দিতে বাধ্য হন।

ঘটনাটি আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় ঘটেছে বলে দাবি পেন্টাগনের। অপর দিকে মস্কোর দাবি, ড্রোনটি ইউক্রেইনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ জন্য তাদের প্রতিষ্ঠিত সংরক্ষিত আকাশসীমার ভেতরে ছিল আর তারা কয়েক মাস আগেই ওই আকাশসীমার বিষয়ে সবাইকে ভালোভাবে জানিয়েছিল।  

এ ধরনের ঘটনা ইউক্রেইনের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষের ঝুঁকির বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।

এক বছর আগে মস্কো প্রতিবেশী ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে কিইভের পশ্চিমা মিত্ররা তাদের অস্ত্রশস্ত্র, সামরিক রসদ ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা শুরু করে।  

আরও খবর:

Also Read: কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন ড্রোনের ঘটনা নিয়ে যা জানা গেছে

Also Read: কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন ড্রোনের সঙ্গে রুশ জঙ্গি বিমানের সংঘর্ষ

Also Read: ড্রোনের ঘটনার পর মার্কিন-রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের ফোনালাপ