কাতারের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি অনুমোদন করার পর রোববার থেকে এটি কার্যকর হবে।
Published : 16 Jan 2025, 10:27 AM
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে ১৫ মাস ধরে যুদ্ধ চলার পর একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, ঘোষণা করেছে মধ্যস্থতাকারী কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র।
১৯ জানুয়ারি, রোববার থেকে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণায় গাজার ফিলিস্তিনিরা উৎসব শুরু করলেও ইসরায়েল হামলা অব্যাহত রেখেছে।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি জানিয়েছেন, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি অনুমোদন করার পর এটি কার্যকর হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “এই চুক্তি গাজায় লড়াই থামাবে, ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের অতি প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করবে এবং জিম্মিদের তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলিত করবে। “
চুক্তির চূড়ান্ত অংশের বিস্তারিত নিয়ে এখনও কাজ চলছে, এমনটি জানালেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহ এটি ‘সমর্থন’ করার জন্য বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
হামাসের নেতা খলিল আল-হাইয়া বলেছেন, এটি ফিলিস্তিনিদের ‘দৃঢ়তার’ ফল।
বহু ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারগুলো যুদ্ধবিরতি চুক্তির খবরে উদযাপন শুরু করলেও গাজায় হামলা বন্ধ করেনি ইসরায়েল। পুরো ভূখণ্ডটিজুড়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
চুক্তি ঘোষণার পর থেকে গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে আল জাজিরা জানিয়েছে।
এসব হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি, জানিয়েছে বিবিসি।
রয়টার্স জানায়, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তি ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টা পর ইসরায়েল গাজায় হামলা তীব্র করে তোলে বলে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির বাসিন্দারা ও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। মধ্যস্থতাকারীরা রোববার যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার আগে লড়াই থামানোর আহ্বান জানিয়েছে।
কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক মাসের মধ্যস্থতার পর বুধবার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে জটিল এই যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি হয়।
২০২৩ এর অক্টোবর থেকে পরবর্তী ১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধে উপকূলীয় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এর আগুন পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়েছে।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে হওয়া এ চুক্তিতে প্রাথমিকভাবে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে, এ সময় গাজা থেকে ধীরে ধীরে বাহিনী প্রত্যাহার করবে ইসরায়েল। ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে কাতারের প্রধানমন্ত্রী আল থানি জানিয়েছেন, চুক্তি বাস্তবায়ন করার ধাপগুলো নিয়ে আলোচকরা ইসরায়েল ও হামাসের সঙ্গে কাজ করছেন।
ইসরায়েল চুক্তিটি গ্রহণ করলেও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এতে সম্মতি দেয়নি। দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ও সরকার এটি অনুমোদন করার পর তারা আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিটিতে সম্মতি দেবে। বৃহস্পতিবার চুক্তিটি নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে বলে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
নেতানিয়াহুর জোট সরকারের কিছু কট্টরপন্থি সদস্যের বিরোধিতা সত্ত্বেও চুক্তিটি ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রত্যাশামতো সবকিছু হলে রোববার থেকে গাজায় বহু কাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। আর এর পরদিন রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেনে ডনাল্ড ট্রাম্প; তিনি ‘গাজা সফলতার’ কৃতিত্ব দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন: