তবে ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীরা বলেছেন, দ্বীপটি বিক্রির জন্য নয়।
Published : 26 Jan 2025, 06:00 PM
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রই গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ পাবে এমনটা বিশ্বাস করেন তিনি।
স্বায়ত্তশাসিত এই ডেনিশ অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ পেতে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্ট ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
“আমার ধারণা, আমরা এটা পাবো,” দ্বীপটির ৫৭ হাজার বাসিন্দা ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থাকতে চায়’ দাবি করে শনিবার এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প এমনটাই বলেন।
কয়েকদিন আগে তার সঙ্গে উত্তপ্ত ফোনালাপে ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেটে ফেদেরিকসেন ‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়’ এমনটা দীপ্ত কণ্ঠে জানিয়ে দেন বলে খবর বেরিয়েছিল; এর প্রতিক্রিয়াতেই দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে ফেরা ট্রাম্পের এ সর্বশেষ মন্তব্য এলো, জানিয়েছে বিবিসি।
আর্কটিকের বিশাল অঞ্চলটি কেনার কথা ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদেও বলেছিলেন। তার যুক্তি ছিল, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থেই গ্রিনল্যান্ডের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।
“আমার ধারণা, সেখানকার লোকজন আমাদের সঙ্গে থাকতে চায়,” দ্বীপটির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শনিবার এয়ারফোর্স ওয়ানের প্রেস রুমে সাংবাদিকদের এমনটাই বলেন তিনি।
“আমি সত্যিই জানি না, ওই দ্বীপের ওপর ডেনমার্কের দাবি কেমন, কিন্তু তারা যদি আমাদের নিয়ন্ত্রণে দিতে না চায় তাহলে তা হবে খুবই অবন্ধুসুলভ কাজ, কেননা এটা করা দরকার মুক্ত বিশ্বের সুরক্ষার জন্য। “আমি মনে করি গ্রিনল্যান্ড আমরা পাবো, কারণ এটি বিশ্বের স্বাধীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত। এটা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এর আর কোনো সম্পর্ক নেই। কেননা, আমরাই ওই স্বাধীনতা দিতে পারবো। তারা পারবে না,” বলেছেন ট্রাম্প।
তার কণ্ঠে এমন আত্মবিশ্বাস দেখা গেলেও দ্বীপটি বিক্রির জন্য নয় বলে বারবারই বলে আসছেন ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।
গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুটে এগেদে বলেছেন, ভূখণ্ডটির ভূমিতে কী করা হবে তা কেবল ‘গ্রিনল্যান্ডেরই বিষয়’। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হতে না চাইলেও প্রতিরক্ষা ও খননকাজে দেশটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আগ্রহও ব্যক্ত করেছেন তিনি।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী ফেদেরিকসেন বলেছিলেন, গ্রিনল্যান্ড কেবল এর বাসিন্দাদেরই, স্থানীয়রাই এর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।
কয়েকদিন আগে ট্রাম্পের সঙ্গে ৪৫ মিনিটের উত্তপ্ত ফোনালাপেও তিনি একই অবস্থান ব্যক্ত করেছেন বলে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
দুজনের ওই ফোনালাপ ছিল ‘ভয়ানক’, নাম প্রকাশে রাজি না হওয়া এক ইউরোপিয়ান কর্মকর্তার বরাতে পত্রিকাটি এমনই জানিয়েছে।
আরেক কর্মকর্তা বলেছেন, গ্রিনল্যান্ড দখলে নিতে ট্রাম্পের আগ্রহ ‘গুরুতর এবং সম্ভাব্যতা বিচারে খুবই বিপজ্জনক’।
গ্রিনল্যান্ড উত্তর আমেরিকা থেকে ইউরোপের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ততম রুটে অবস্থিত, যা এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। দ্বীপটিতে একটি বড়সড় মার্কিন মহাকাশ কেন্দ্রও আছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিরল খনিজ, ইউরেনিয়াম, লোহার মতো গ্রিনল্যান্ড যেসব প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সেগুলো খননেও অনেকের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
দ্বীপটি মোটাদাগে স্বায়ত্তশাসিত হলেও এটি এখনো ডেনমার্ক রাজ্যের অংশ। তবে দ্বীপটির বাসিন্দাদের মধ্যে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাও বিদ্যমান।