উইসেয়ং কাউন্টির দাবানলটিতে ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনার অংশ কয়েকটি প্রাচীন মন্দির হুমকির মুখে পড়েছে।
Published : 27 Mar 2025, 05:26 PM
দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের কয়েকটি এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাবানল একদিনের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ এসব দাবানলকে দেশটির সবচেয়ে মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে অভিহিত করেছে।
শনিবার থেকে শুরু হওয়া অন্তত পাঁচটি দাবানলে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে আর কয়েকটি ঐতিহাসিক মন্দির ভস্মীভূত হয়ে গেছে।
উইসেয়ং কাউন্টি থেকে শুরু হওয়া দাবানলটি ইতোমধ্যে ৮১ হাজার ৫০০ একরেরও বেশি এলাকা পুড়িয়ে দিয়ে নতুন নতুন এলাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি সবগুলো দাবানলের মধ্যে সবচেয়ে বড় আগুন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একক দাবানল হয়ে উঠেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান দক সু দাবানল নিয়ে সরকারি এক বৈঠকে বলেন, “বহু হতাহত নিয়ে আমরা জাতীয়ভাবে একটি সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে আছি কারণ দাবানলগুলো নজিরবিহীন দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে।”
দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পবর্তময় অঞ্চল তিনটিতে দাবানল মোকাবেলায় ১২০টি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে।
পার্বত্য অঞ্চল হওয়ায় দাবানল নিয়ন্ত্রণে দক্ষিণ কোরিয়াকে হেলিকপ্টারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে গিয়ে বুধবার একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়, এতে পাইলট নিহত হন।
রয়টার্স জানিয়েছে, উইসেয়ংয়ে উৎপত্তি হওয়া দাবানলটি পূর্বমুখে দ্রুত ছড়াতে ছড়াতে প্রায় উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে, শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্য প্রবল বাতাসের কারণে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।
দেশটির বন বিভাগের স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষক ওয়ান মাইয়ং সু জানান, বুধবার উইসেয়ংয়ের দাবানল দ্রুত ছড়াতে শুরু করে, এরপর মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে ৫১ কিলোমিটার দূরের উপকূলীয় কাউন্টি ইউনদেওকে পৌঁছে যায়।
দক্ষিণ কোরিয়ার আবহাওয়া সংস্থা দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল কিছু বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে দাবানল কবলিত এলাকাগুলোতে পাঁচ মিলিমিটারেরও কম বৃষ্টিপাত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে এই বৃষ্টি দাবানল নিয়ন্ত্রণে খুব বেশি ভূমিকা রাখবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
উইসেয়ং কাউন্টির দাবানলটিতে অনেক প্রাচীন মন্দির ও ঘরবাড়ি ধ্বংস হচ্ছে। বুধবার এনদং শহরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উইসেয়ং দাবানলের কারণে হাও গ্রাম এবং ৪৫০ বছরেরও বেশি পুরনো বায়ুংসান কনফুসিয়ান একাডেমিসহ ইউনেস্কো ঘোষিত বেশ কয়েকটি বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। এসব স্থাপনা রক্ষা করার জন্য সেগুলোতে অগ্নিনিরোধী রাসায়নিক স্প্রে করে রাখা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানিয়েছে, ৬৮১ সালে নির্মিত গুন মন্দির ইতোমধ্যেই দাবানলে পুড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।