আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে তিনি বরং জোর দিয়ে বলেছেন, জনগণ তাদের স্বার্থ রক্ষায় সেবা পেতেই তাকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছে।
Published : 06 Dec 2024, 10:46 AM
পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ফ্রান্সের মিশেল বার্নিয়ের পদত্যাগের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ কয়েকদিনের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, বার্নিয়ে পদত্যাগের পরপর মাক্রোঁর পদত্যাগের দাবিও উঠেছিল। কারণ, মাক্রোঁর অনেক রাজনৈতিক বিরোধীই মনে করেন, মাক্রোঁর পদত্যাগ দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটাবে।
কিন্তু সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে তিনি ২০২৭ সালে 'মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত' পদে থাকার অঙ্গীকার করেন।
আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে তিনি বরং জোর দিয়ে বলেছেন, জনগণ তাদের স্বার্থ রক্ষায় সেবা পেতেই তাকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ১০ মিনিটের ভাষণে প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ এই অঙ্গিকার করেন।
নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্বের পালনের জন্য তিনি ধন্যবাদ জানান মাত্র তিন মাসের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বার্নিয়েকে।
এর আগে, বুধবার দেশটির আইনপ্রণেতারা ব্যাপকভাবে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। এতে প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ নিয়োগ দেওয়ার তিন মাসের মাথায় বার্নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হন।
৬০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথম কোনও ফরাসি পার্লামেন্টে এমন ঘটনাকে 'নজিরবিহীন' বলে অভিহিত করেছেন মাক্রোঁ।
প্রধানমন্ত্রী বার্নিয়ের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে কট্টর ডানপন্থি ও বামপন্থি আইপ্রণেতারাও সমর্থন দেন, এতে প্রস্তাবটির পক্ষে ৩৩১ ভোট পড়ে।
বৃহস্পতিবার বার্নিয়ার পদত্যাগ করেন এবং বাজেট প্রত্যাহার করা হয়। নতুন সরকার নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তার মন্ত্রীদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করবেন।
তবেএ সময়ে মাক্রোঁর দায়িত্বে কোনও প্রভাব পড়বে না।
জুলাইয়ে আগাম নির্বাচন ডাকার সিদ্ধান্ত, পার্লামেন্টে অচলাবস্থা সৃষ্টি এবং ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক সংকট তৈরি করার জন্য মাক্রোঁ ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছেন।
ফ্রান্সের পার্লামেন্টের বর্তমান অচলাবস্থা চলতি গ্রীষ্মে মাক্রোঁর ডাকা আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনেরই ফল। এই নির্বাচনে তার দল খারাপ ফল করেছে। তবে তিনি তার দায় স্বীকার করেছেন।
অনাস্থা ভোটে ফ্রান্স সরকারের পতন, রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত
তিনি বলেছেন, “আমি জানি, অনেকে আমাকে দোষারোপ করছেন। দোষ দেওয়াটাই স্বাভাবিক। আমি জানি এই অস্থিতিশীল অবস্থার জন্য আমি দায়ী।”
পার্লামেন্টের ভোটারদের সরাসরি সম্বোধন করে তিনি বলেন, তার রাজনৈতিক বিরোধীদের কেউ কেউ দায়িত্ব পালনের চেয়ে বিশৃঙ্খলা বেছে নিয়েছেন।
তবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সে সম্পর্কে কোনও ইঙ্গিত দেননি মাক্রোঁ। কিন্তু বলেছেন, তাদের তাৎক্ষণিক লক্ষ্য ২০২৫ সালে বাজেট করা।
ফ্রান্সের আইন অনুযায়ী, অন্তত এক বছরের জন্য নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচন আয়োজন করা যাবে না। তার মানে, ২০২৫ সালের গ্রীষ্ম বা শরতের আগে নতুন ব্যয়সাশ্রয়ী বাজেট প্রণয়নের সম্ভাবনা নেই।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কার নাম ঘোষণা হতে পারে তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেটেইলেউ এবং মধ্যপন্থি সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফ্রাঁসোয়া বায়রু।
তবে অচলাবস্থার মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ গোষ্ঠীর সমর্থন পাবে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হতে পারে। শনিবারের আগে পরবর্তী সরকার কার্যকর হবে কি না তা স্পষ্ট নয়।