শিগগিরই বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন সৌদি আরব ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চলতি মাসের প্রথমদিকে চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরব শত্রুতা বাদ দিয়ে ফের সম্পর্ক পুনর্স্থাপনে সম্মত হয়।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2023, 09:11 AM
Updated : 23 March 2023, 09:11 AM

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরআব্দুল্লাহিয়ান শিগগিরই বৈঠকে মিলিত হওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা এসপিএ এ খবর জানিয়েছে।

এসপিএ জানিয়েছে, মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে এ মন্ত্রীদ্বয় ফোনে কথা বলেন এবং বৈঠকে তারা মিত্রতা পুনর্স্থাপনে হওয়া একটি চুক্তির অধীনে ফের দূতাবাস খোলার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করবেন।

ইরানের রাষ্ট্রাত্ত বার্তা সংস্থা আইআরএনএ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফোনে কথা বলার সময় আমিরআব্দুল্লাহিয়ান সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে ইরান প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন। এ সময় দুই দেশের দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী যত দ্রুত সম্ভব পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এবং ফের দূতাবাস ও কন্স্যুলেট খুলতে প্রস্তুতি শুরু করার বিষয়ে সহমত হন।  

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দীর্ঘদিন যাবৎ মধ্যপ্রাচ্যের দুই আঞ্চলিক শক্তি সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তাদের শত্রুতা পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছিল। ইয়েমেন ও সিরিয়ার যুদ্ধে তারা পরস্পর বিরোধী পক্ষগুলোকে সমর্থন দিয়েছে।

কিন্তু চলতি মাসের প্রথমদিকে চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরব শত্রুতা বাদ দিয়ে ফের সম্পর্ক পুনর্স্থাপনে সম্মত হয়।

শিয়া প্রধান ইরান ও সুন্নি প্রধান সৌদ আরবের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বেইজিংয়ে আগে প্রকাশ করা হয়নি এমন বৈঠকে মিলিত হয়ে কয়েকদিন ধরে আলোচনার পর সম্পর্ক পুনর্স্থাপনে চুক্তি করার কথা ঘোষণা করেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন,উভয়পক্ষ উত্তেজনা হ্রাসের মাধ্যমে সুবিধা পেতে প্রস্তুত; উপসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নিঃসঙ্গ করার মার্কিন প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়ার উপায় খুঁজছিল ইরান আর সৌদি আরব এখন অর্থনৈতিক উন্নয়নেই বেশি মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে।   

প্রখ্যাত শিয়া মুসলিম ইমাম নিমর আল নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা নিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের উত্তেজনা দেখা দেওয়ার পর ক্ষুব্ধ ইরানিরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলা চালিয়েছিল। এর জেরে ২০১৬ সালে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব। 

এরপর ২০১৯ সালে সৌদি আরবের তেল স্থাপনাগুলোতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হলে তার জন্য ইরানকে দায়ী করে রিয়াদ। পাশাপাশি পারস্য উপসাগরে তেলবাহী ট্যাংকারে হামলার জন্য ইরানকে দায় দেয় তারা। ইরান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে।

এর পাশাপাশি ইরানের মিত্র ইয়েমেনের শিয়া হুতি রাজনৈতিক গোষ্ঠী সৌদি আরবে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছিল। সৌদি আরব ইয়েমেনের হুতিদের বিরুদ্ধে লড়াইরত জোট বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছে। পরে হুতিরা ২০২২ সালে সৌদি জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সংযুক্ত আরব আমিরাতেও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল।    

এখন ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে ফের সম্পর্ক জোড়া লাগার মধ্য দিয়ে সম্পর্কের উন্নতি ঘটলে তা মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তৃত পরিসরে শান্তির সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।  

আরও খবর:

Also Read: ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিকে ‘সফরের আমন্ত্রণ সৌদি আরবের’

Also Read: বৈরিতা ভুলে এক হচ্ছে ইরান-সৌদি আরব, ফের চালু হচ্ছে দূতাবাস