ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিকে ‘সফরের আমন্ত্রণ সৌদি আরবের’

এক চিঠিতে সৌদি আরবের বাদশা সালমান এ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে ইরানের একজন ঊধ্র্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2023, 04:37 AM
Updated : 20 March 2023, 04:37 AM

ইরান জানিয়েছে, সৌদি আরব তাদের দেশের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে রাষ্ট্রীয় সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।  

এক চিঠিতে সৌদি আরবের বাদশা সালমান বিন আব্দুলআজিজ এ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে ইরানের একজন ঊধ্র্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

তবে সৌদি আরব এটি এখনও নিশ্চিত করেনি। মাত্র কিছুদিন আগে এই দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্স্থাপনের বিষয়ে সম্মত হয়।

চীনের মধ্যস্থতায় দু’পক্ষের কূটনৈতিক সম্পর্কের বরফ গলেছে যা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিকে পাল্টে দিতে পারে।    

এই দুই দেশের শত্রুতা মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসে প্রাধান্য বিস্তার করে আছে।

বিবিসি জানিয়েছে, সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ সফরের এই আমন্ত্রণের বিষয়টি এক টুইটে জানিয়েছেন ইরানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামশিদি। তিনি জানান, রাইসি এই ‘আমন্ত্রণ’কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ‘সহযোগিতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ইরান প্রস্তুত আছে বলে জোর দিয়েছেন’।

পৃথকভাবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দোলাহিয়ান সাংবাদিকদের বলেছেন, এ দুই দেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে একটি বৈঠকের বিষয়ে সম্মত হয়েছে আর এ বৈঠকের জন্য সম্ভাব্য তিনটি স্থানের প্রস্তাব করা হয়েছে।

তবে তিনি স্থানগুলোর নাম জানাননি এবং বৈঠকটি কখন হতে পারে সে বিষয়েও কিছু বলেননি।

চীনের উদ্যোগে দু’পক্ষের মধ্যে কয়েকদিন ধরে আলোচনা চলার পর আকস্মিকভাবে এ দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে, সম্পর্কের এ উন্নতি বেগবান হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

উভয় দেশই দুই মাসের মধ্যে ফের দূতাবাস খোলার এবং বাণিজ্য ও নিরাপত্তা সম্পর্ক পুনর্স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ দুই দেশের সম্পর্কের এই উন্নতিকে সতর্কভাবে স্বাগত জানিয়েছে। এর আগে তাদের মধ্যে পুনর্মিলনের অনেক প্রচেষ্টা ভেস্তে গিয়েছিল।

বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলা চালানোর পর ২০১৬ সালে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে রিয়াদ। সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর সৌদি আরব প্রখ্যাত শিয়া মুসলিম ধর্মীয় ইমাম শেখ নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলে প্রতিক্রিয়ায় শিয়া অধ্যুষিত ইরানের বিক্ষুব্ধরা সৌদি দূতাবাসে হামলা চালায়।

তারপর থেকে সুন্নি প্রধান সৌদি আরবের সঙ্গে শিয়া প্রধান ইরানের উত্তেজনা প্রায়ই চরম আকার ধারণ করেছে। উভয়েই একে অপরকে মধ্যপ্রাচ্যে প্রাধান্য বিস্তারের চেষ্টারত হুমকি সৃষ্টিকারী শক্তি হিসেবে দেখে আসছিল।

প্রতিবেশী সিরিয়া ও ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধসহ আঞ্চলিক অনেক সংঘাতে তারা পরস্পর বিরোধী পক্ষকে সমর্থন দিয়ে এসেছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দোলাহিয়ান আরও বলেছেন, বাহরাইনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে ইরান আশা করছে।

বাহরাইন সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র। সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পর তারাও রিয়াদকে অনুসরণ করে।

আব্দোলাহিয়ান বলেন, “আমরা আশা করছি, ইরান ও বাহরাইনের মধ্যে কিছু বাধা দূর হবে এবং আমরা দূতাবাসগুলো ফের খুলতে মূল পদক্ষেপগুলো নেবো।”

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিষয়ে কোনো কিছু বলেনি বাহরাইন, তবে তারা ইরান-সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্স্থাপনের সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়েছিল।

ইরান মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী আরব দেশগুলোর সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নয়নের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে; এসব দেশের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডানও আছে।