চীন সফরে গেছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো। বেইজিংয়ে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ওই বৈঠকে তিনি গত সপ্তাহে চীনের দেওয়া ইউক্রেইন শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন বলে জানায় বিবিসি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র লুকাশেঙ্কো বৈঠকে শি কে বলেছেন, চীনের পরিকল্পনায় তার ‘পূর্ণ সমর্থন’ রয়েছে। তিনি চীনের ওই পরিকল্পনার প্রশংসাও করেন।
ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে এতদিন চুপচাপ থাকলেও সম্প্রতি এ যুদ্ধের অবসানে নিজেদের কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে চীন।
দেশটি যুদ্ধ নিয়ে নিজেদের নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকার দাবি করলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রস্তাবনায় মস্কোর পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে বেইজিং।
চীন এখন পর্যন্ত রাশিয়াকে ইউক্রেইনে আক্রমণের কারণে নিন্দা জানায়নি কিংবা প্রতিবেশী দেশে মস্কোর আক্রমণকে ‘আগ্রাসন’ অ্যাখ্যাও দেয়নি। তারা রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞারও কড়া সমালোচনা করে আসছে।
এখন ইউক্রেইন যুদ্ধ ঘিরে এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ঘনিষ্ঠতা আরোও বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
সম্প্রতি চীনের শীর্ষ একজন কূটনীতিক মস্কো সফর করে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এখন লুকাশেঙ্কোর বেইজিং সফর চীন-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা আরো বাড়ার ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে রাশিয়ার আক্রমণের বর্ষপূর্তিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ যুদ্ধ অবসানে, যুদ্ধবিরতি এবং উত্তেজনা ক্রমশ হ্রাস করতে ১২ দফা প্রস্তাব দেওয়া হয়।
যে প্রস্তাবে জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে শান্তি আলোচনায় বসার আহ্বান জানানো হলেও কোথাও সুনির্দিষ্ট করে এটা বলা হয়নি যে, রাশিয়াকে ইউক্রেইন থেকে তাদের সব সেনা প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
তারা রাশিয়ার ওপর ‘একতরফা নিষেধাজ্ঞারও’ সমালোচনা করেছে। যা আদতে ইউক্রেইনের মিত্র পশ্চিমাদের সমালোচনা।
ওই পরিকল্পনা নিয়ে শি কে লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলির প্রথম এবং সর্বাগ্রে লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি বিশ্বব্যাপী সংঘর্ষ আটকানো। যে সংঘর্ষে কেউই জিততে পারবে না।”
অন্যদিকে, লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠকে শি ‘সব ধারণের শীতল যুদ্ধের মানসিকতা’ পরিত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘সব দেশের উচিত বিশ্ব অর্থনীতির রাজনীতিকরণ বন্ধ করা। এবং বাস্তবে এমন কিছু করা যা যুদ্ধবিরতি, যুদ্ধ বন্ধ এবং সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে সহায়তা করবে।”
লুকাশেঙ্কো চীনে তিনদিন থাকবেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু করার কয়েক মাস পর গত বছর সেপ্টেম্বরে বেলারুশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন করে চীন।