বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের দায়িত্বহীনতায় সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।
Published : 20 Jun 2024, 05:02 PM
ভারতে চলতি গ্রীষ্মে ৪০ হাজারেরও বেশি সম্ভাব্য হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে আর দেশটিজুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলা তাপপ্রবাহে ১০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
একই সময় ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের কিছু অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা দেখা দিয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
চলতি গ্রীষ্মে এশিয়াজুড়ে কোটি কোটি মানুষ তীব্র গরমের কবলে পড়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের দায়িত্বহীনতায় সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। এ সময় অন্যতম দীর্ঘ মেয়াদি একটি তাপদাহ উত্তর ভারতের বিশাল অংশজুড়ে বয়ে গেছে যখন তাপমাত্রা বেড়ে প্রায়ই ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে।
মার্চে গ্রীষ্মকাল শুরু হওয়ার পর থেকে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে দিল্লি ও আশপাশের অঞ্চলে দিন এবং রাত, উভয় সময়ের তাপমাত্রা স্বাভাবিক গড়ের চেয়ে অনেক বেশি থাকায় হাসপাতালগুলিতে তাপজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ সময় তীব্র তাপের কারণে অনেক উড়ন্ত পাখিও অসুস্থ হয়ে নিচে পড়ে গেছে।
রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য পর্যায়ের হাসপাতালগুলোকে এ ধরনের রোগীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি দিল্লির হাসপাতালগুলোকে বেডের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১ মার্চ থেকে ১৮ জুনের মধ্যে ৪০ হাজারেরও বেশি সম্ভাব্য হিটস্ট্রোকে আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে এবং অন্তত ১১০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর চলতি মাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, ভারসাম্যহীন বৃদ্ধির কারণে ভারতের শহরগুলো ক্রমেই ‘তাপের ফাঁদ’ হয়ে উঠছে।
অলাভজনক ‘ওয়াইল্ডলাইফ এসওএস’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও কার্তিক সত্যনারায়ণ বলেন, “চলমান তাপদাহের সময় অতিরিক্ত তাপের কারণে পাখি আকাশ থেকে পড়ে যাচ্ছে, আমরা এ সময়টিতেই বেশিরভাগ পাখি উদ্ধারের ডাক পাচ্ছি।”
তিনি আরও জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে, ওয়াইল্ডলাইফ এসওএস দিল্লি রাজধানী অঞ্চল এবং তার আশেপাশে প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০টি পাখি উদ্ধারের ডাক পেয়েছে। বেশির ভাগ ডাকের মধ্যে রয়েছে পাখি উদ্ধারের অনুরোধ।
এদিকে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মঙ্গলবার রাতে কমপক্ষে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বন্যা ও ভূমিধসের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতি ঘটনায় আসামে ১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের অন্যতম বৃহত্তম উপনদী কপিলির পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে গেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মে মাসের শেষ থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে রাজ্যটিতে ৩০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে।
আরও পড়ুন: