এই ১০ জনের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মণিপুরের জাতিগত সংগঠনগুলো স্কুল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
Published : 12 Nov 2024, 02:45 PM
ভারতের অস্থিরতা কবলিত উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে ১০ সশস্ত্র ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিরা একটি থানায় আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করেছিল।
রয়টার্স জানিয়েছে, রাজ্যটির পুলিশ সোমবারের হামলাকারীদের ‘সশস্ত্র জঙ্গি’ বলে বর্ণনা করেছে।
এক বিবৃতিতে পুলিশ বলেছে, আধাসামরিক বাহিনী ও পুলিশ হামলাকারীদের তীব্রভাবে বাধা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, এর আগে দুইপক্ষের মধ্যে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। হামলাকারীরা জিরিবাম জেলা শহরের নিকটবর্তী ওই থানায় হামলা চালানোর পর গোলাগুলি শুরু হয়।
এ সময় হামলাকারীদের গুলিতে এক সেনা আহত হন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তাদের দেওয়া বিবৃতিতে পুলিশ বলেছে, “গোলাগুলি থামার পর ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে সশস্ত্র জঙ্গিদের ১০ জনের মৃতদেহ ও অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।”
এরপর রাতে পাহাড়ি এলাকায় ও ইম্ফল উপত্যকায় ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তবে ‘জঙ্গি’ বলে কথিত এই ১০ জনের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার মণিপুরের জাতিগত সংগঠনগুলো স্কুল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তারা মণিপুরের পাহাড়ি জেলাগুলোতে স্থানীয় সময় ভোর ৫টা থেকে পরবর্তী ১১ ঘণ্টার জন্য বনধের ডাক দিয়েছে। রাস্তায় কোনো যানবাহন না চলায় পাহাড়ি জেলাগুলোর জনজীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
কুকি সম্প্রদায়ের নেতারা জানিয়েছেন, যাদের হত্যা করা হয়েছে তারা স্থানীয় গ্রামগুলোর স্বেচ্ছাসেবক, তারা হামার নৃগোষ্ঠীর সদস্য। সম্প্রতি এক সশস্ত্র হামলায় একজন নারী নিহত হওয়ার পর থেকে পাহাড়িদের গ্রামগুলো রক্ষার জন্য তারা ওই এলাকায় টহল দিচ্ছিল।
২০২৩ সালের মে থেকে মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই ও সংখ্যালঘু কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা চলছে। অর্থনৈতিক সুবিধা ও কোটা নিয়ে বিরোধ থেকে এ দাঙ্গার সূত্রপাত হয়।
মণিপুরের মেইতেই জনগোষ্ঠী প্রধানত উপত্যকাগুলোতে বসবাস করে আর কুকিরা বাস করে পাহাড়ে। দুই জনগোষ্ঠীর আবাসভূমিকে একটি ‘বসতিহীন ভূখণ্ড’ দিয়ে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী এই ভূখণ্ডটি পাহারা দিয়ে রাখে।
গত বছরের মে মাস থেকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত অন্তত ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ৩২ লাখ জনসংখ্যার মণিপুরের ৬০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।