শীতল যুদ্ধকালের এই দুই সাবেক প্রতিপক্ষের রিয়াদ বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
Published : 18 Feb 2025, 02:34 PM
ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্য নিয়ে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বৈঠকে বসেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা।
শীতল যুদ্ধকালের এই দুই সাবেক প্রতিপক্ষের মঙ্গলবারের এ বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া, উভয়পক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও, হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ বৈঠকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইউরি উশাকভের সঙ্গে মিলিত হবেন।
রয়টার্স জানায়, বৈঠকে দুই পক্ষ ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানের পথগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্বহাল করা নিয়ে আলোচনা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বের এই দুই প্রভাবশালী দেশের মধ্যে সম্পর্ক ফের স্বাভাবিক হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে শীর্ষ বৈঠকের পথ খুলে দিতে পারে।
মঙ্গলবার রিয়াদে আলোচনা শুরুর আগে রাশিয়ার সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে একজন ‘সমস্যা সমাধানকারী’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
দিমিত্রিয়েভ যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা রুশ এবং গোল্ডম্যান স্যাক্সের সাবেক ব্যাংকার। ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ট্রাম্প যখন প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখনও তিনি মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে প্রাথমিক যোগাযোগে ভূমিকা রেখেছিলেন।
রাশিয়া জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। আলোচনায় ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসান এবং রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক পুনর্বহালের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।
রিয়াদে ইউক্রেইন বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও বৈঠকে কিইভকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ইউক্রেইন বলেছে, এই আলোচনায় তাদের পক্ষ হয়ে কোনো শান্তি চুক্তি করা যাবে না।
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করার এক মাসের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সময় ওয়াশিংটনের যে অবস্থান ছিল তার থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে সরে আসার একটি নজির। রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ পরিত্যাগ করা বাইডেন, ‘রাশিয়া ইউক্রেইন যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে আন্তরিক নয়’ বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মস্কো ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানের বিষয়ে আন্তরিক কি না, তা মঙ্গলবারের বৈঠকেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেইনের কৃষ্ণসাগরীয় উপদ্বীপ ক্রাইমিয়া দখল করে সেটিকে নিজেদের ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। এরপর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী দেশটিতে পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরু করে রুশ বাহিনী। প্রায় তিন বছর ধরে চলা এ যুদ্ধে রাশিয়া ইউক্রেইনের এক পঞ্চমাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে।