বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাগরগুলো উষ্ণ হয়ে ওঠায় টাইফুনগুলো ক্রমেই আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
Published : 08 Sep 2024, 02:04 PM
ফিলিপিন্স ও চীনের হাইনান দ্বীপে তাণ্ডব চালানোর পর ভিয়েতনামে হাজির হওয়া টাইফুন ইয়াগির কারণে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে।
চলতি বছর এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়টি শনিবার ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূল দিয়ে সাগর থেকে স্থলে উঠে আসে।
গত সপ্তাহের মাঝামাঝি ফিলিপিন্সি দ্বীপপুঞ্জের পূর্ব দিকের প্রশান্ত মহাসাগরে ইয়াগির উৎপত্তি। এরইমধ্যে ঝড়টির কারণে ফিলিপিন্সে অন্তত ১৬ জন এবং হাইনানে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন।
শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে টাইফুনটি ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলীয় দ্বীপ জেলাগুলোতে আঘাত হানে। এ সময় এর কেন্দ্রের কাছে বাতাসের সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার। একদিন আগে হাইনানের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় ইয়াগির বাতাসের সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘন্টায় ২৩৪ কিলোমিটার, পরদিন টাইফুনটি কিছুটা দুর্বল হয়।
ভিয়েতনামের সরকার জানিয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা পর্যন্ত টাইফুনটির কারণে চারজন নিহত ও ৭৮ জন আহত হয়েছেন।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, সাগরে আরও অন্তত ১২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
টাইফুনটির ঝড়ো হাওয়ায় ভিয়েতনামের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে উপকূলীয় শিল্প শহর হাইফং অন্যতম। শনিবার ২০ লাখ বাসিন্দার শহরটির উপর দিয়ে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যায়। এতে নগরীর কয়েকটি অংশ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাইফংয়ের পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলীয় তিনটি প্রদেশের ব্যাপক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে।
রয়টার্স জানায়, প্রবল ঝড়ো বাতাসে হাইফং নগরীর ভবনগুলোর কাচের জানালা ও গাছের বহু ডাল ভেঙে পড়ে। সাগরের ঢেউগুলো তিন মিটার উঁচু হয়ে পাড়ে আছড়ে পড়ে।
কর্তৃপক্ষ শহটির বাসিন্দাদের ঘরে থাকার আহ্বান জানানোর পর রাস্তাগুলো জনশূন্য হয়ে যায়।
সামাজিক মাধ্যমে আসা ছবি ও ভিডিও ফুটেজগুলোতে টিনের চাল উড়ে যেতে দেখা গেছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, উত্তর ভিয়েতনামে হাজার হাজার গাছ উপড়ে পড়েছে আর বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভিয়েতনাম উপকূলীয় শহরগুলো থেকে প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়ে সেখানে সামরিক বাহিনীর সাড়ে চার লাখ সেনা মোতায়েন করেছে।
ইয়াগির কারণে হ্যানয়ের নোই বাই বিমানবন্দরের কার্যক্রম বেশ কয়েক ঘন্টা বন্ধ থাকে। এ সময় দেশটির উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে ব্যস্ত এ বিমানবন্দরে ৩০০টিরও বেশি ফ্লাইটের যাত্রা বাতিল করা হয়। রাজধানী হ্যানয়সহ উত্তরাঞ্চলীয় ১২টি প্রদেশের হাই স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাগরগুলো উষ্ণ হয়ে ওঠায় টাইফুনগুলো ক্রমেই আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।