দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নরম্যান্ডি উপকূলের লড়াইয়ে নিহতদের স্মরণে ফ্রান্সে কয়েকটি দেশের নেতাদের উপস্থিতিতে ডি-ডের ৮০তম বার্ষিকী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় গত বৃহস্পতিবার।
Published : 07 Jun 2024, 05:17 PM
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নরম্যান্ডির উপকূলে মিত্র বাহিনীর ডি-ডে অবতরণের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রান্সে আয়োজিত অনুষ্ঠান আগেভাগেই ছেড়ে চলে যাওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে ক্ষমা চেয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
নরম্যান্ডি উপকূলে ওমাহা সৈকতের লড়াইয়ে নিহতদের স্মরণে ফ্রান্সে কয়েকটি দেশের নেতাদের উপস্থিতিতে ডি-ডে বার্ষিকী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় ৬ জুন বৃহস্পতিবার।
কয়েকটি খবরে বলা হয়েছে, বিশ্ব নেতারা ওমাহায় সমবেত হওয়ার আগেই সুনাক অনুষ্ঠান ছেড়ে লন্ডনে চলে যান একটি টিভি সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য। আইটিভি’র সেই সাক্ষৎকার সম্প্রচার হওয়ার কথা রয়েছে আগামী সপ্তাহে।
অনুষ্ঠান ছেড়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই চলে যাওয়ায় সুনাক তার বিরোধীদের এমনকী মিত্রদেরও সমালোচনার মুখে পড়েন। এরপরই সুনাক তার ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন। বলেছেন, ফ্রান্সে তার আরও বেশি সময় না থাকাটা ভুল হয়েছে।
সুনাক চলে যাওয়াতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশ্ব নেতাদের অফিসিয়াল ছবিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁকে ছবি তুলতে হয়েছে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে।
যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রী সুনাক আগাম নির্বাচন ডেকেছেন। এই সময়ে তার নির্বাচনী প্রচারের কেন্দ্রে রয়েছে এই ডি-ডে উদযাপন। সুনাক ফ্রান্সে গিয়ে অনুষ্ঠানে যোগও দিয়েছেন। কিন্তু অন্যান্য সব দায়িত্ব তিনি দিয়ে এসেছেন ক্যামেরনসহ অন্যান্য মন্ত্রীদের ওপর।
বামপন্থি ট্যাবলয়েড দ্য ডেইলি মিরর তাদের প্রথম পাতার শিরোনামে লিখেছে, “প্রধানমন্ত্রী ডি-ডেকে ছুড়ে ফেলেছেন।”
বিরোধীদল লেবার পার্টি একে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সুনাকে কর্তব্যে অবহেলা আখ্যা দিয়েছে। ওদিকে, স্কটিশ অর্থমন্ত্রী বলেছেন, সুনাকের ডি-ডে অনুষ্ঠান আগেভাগে ত্যাগ করাটা প্রবীণ সেনাদের জন্য ‘অসম্মানজনক’।
মধ্যপন্থি লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা বলেছে, সুনাক তাদেরকে পরিত্যাগ করেছেন যারা নরম্যান্ডিতে রক্তক্ষয়ী লড়াই লড়েছিল।
১৯৪৪ সালের ৬ই জুন, নাৎসী বাহিনীর হাত থেকে পশ্চিম ইউরোপকে মুক্ত করার যুদ্ধে অংশ নিতে মিত্র বাহিনীর প্রায় ১ লাখ ৫৬ হাজার সেনা সদস্য ফ্রান্সে অবতরণ করেছিল। লড়াইয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার সেনা নিহত হয়।বিশ্বে সামরিক বাহিনীর ইতিহাসে এটি ছিল সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান।
ফ্রান্সের নরম্যান্ডি উপকূলে ডি-ডে খ্যাত ওই অভিযানের মধ্য দিয়েই নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে মিত্রবাহিনীর বিজয়ের সূচনা হয়েছিল। ডি-ডে শব্দটি অভিযান শুরুর সেই দিনটি বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।