জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারীরা ২০০ পৃষ্ঠারও বেশি প্রশ্ন তৈরি করে রাখলেও ইউন তাদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না।
Published : 16 Jan 2025, 02:01 PM
দক্ষিণ কোরিয়ার গ্রেপ্তার হওয়া প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের জিজ্ঞাসাবাদেও অংশ নিতে ইচ্ছুক নন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। এতে সামরিক আইন জারির চেষ্টা করে ইউন বিদ্রোহ করেছেন কি না, তা নিয়ে শুরু হওয়া একটি ফৌজদারি তদন্তে ফের বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় গ্রেপ্তার হওয়া প্রথম প্রেসিডেন্ট ইউন। বুধবার গ্রেপ্তারের পর তিনি তদন্তে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করে তদন্তকারীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি। পরে স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তাকে সিউলের ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে একটি নির্জন সেলে তিনি রাত কাটিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রয়টার্স জানায়, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য কর্তৃপক্ষের হাতে ৪৮ ঘণ্টা সময় আছে। এরপর তাকে অবশ্যই ছেড়ে দিতে হবে বা বা তাকে ২০ দিন পর্যন্ত আটক রাখতে আদালতের পরোয়ানা চাইতে হবে।
বৃহস্পতিবার সাংবিধানিক আদালতে ইউনের অভিশংসন বিচারের দ্বিতীয় শুনানির কথা রয়েছে। তাকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হবে এই বিচারেই তা নির্ধারিত হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্ট ইউনকে অভিশংসিত করার পর থেকে তিনি সাময়িকভাবে বরখাস্ত আছেন।
প্রেসিডেন্ট ইউন ৩ ডিসেম্বর হঠাৎ সামরিক আইন জারি করে সবাইকে হতভম্ব করে দেন। পার্লামেন্ট তার এই ঘোষণার সাড়া না দেওয়ায় প্রায় ছয় ঘণ্টা পর সামরিক আইন তুলে নেন তিনি। কিন্তু এরপরও কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গভীর রাজনৈতিক সংকটে পড়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়া।
সামরিক আইন জারিকে কেন্দ্র করে ১৪ ডিসেম্বর পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট ইউনকে অভিসংশিত করে। অভিশংসিত হওয়ার পর তাকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এখন একজন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট দক্ষিণ কোরিয়ার প্রশাসনিক কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন।
বুধবার ইউনের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে কর্তৃপেক্ষর সঙ্গে সপ্তাহব্যাপী এক অচলাবস্থার অবসান হয়। এ দিন ভোর হওয়ার আগেই পুলিশ তার সিউলের বাসভবনে ঝটিকা অভিযান চালায়। পুলিশের এই অভিযানে বাড়িটির কাছে থাকা তার অনুসারীরা হতাশ হয়ে পড়েন।
ইউন জানিয়েছেন, তিনি ‘অপ্রীতিকর রক্তপাত’ এড়াতে দুর্নীতি তদন্ত সংস্থার (সিআইও) কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেকে তাদের হাতে তুলে দেন। তবে এই তদন্তকে বেআইনি ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে অবৈধ দাবি করে নিজের প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন তিনি।
বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্তকারী সিআইওর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তদন্তকারীরা ইউনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২০০ পৃষ্ঠারও বেশি প্রশ্ন তৈরি করে রেখেছেন, কিন্তু তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না।
এমনকী তিনি একটি প্রশ্নেরও উত্তর দেননি বলে সিআইওর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু ইউন জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়ার জন্য হাজির হবেন না বলে এক টেক্সট বার্তায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তার এক আইনজীবী।
আরও পড়ুন: