ফ্লোরিডায় বৃহস্পতিবার প্রথম আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় হেলেন। এ ঝড়ের তাণ্ডবে ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ ক্যারোলাইনা এবং ভার্জিনিয়ায় মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
Published : 29 Sep 2024, 07:51 PM
ঘূর্ণিঝড় হেলেনের প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল বৃষ্টিপাতে বন্যাকবলিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আরও রাজ্য। নর্থ ক্যারোলাইনা এবং টেনেসির বেশকিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ৬৩ জনে।
বিবিসি-র মার্কিন সহযোগী সংবাদ সংস্থা সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, শনিবার বন্যায় নর্থ ক্যারোলাইনার পার্বত্য শহর অ্যাশভিল অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
রাজ্যে প্রায় চার শতাধিক রাস্তা বন্ধ রয়েছে। সেখানে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের গভর্নর রয় কুপার জানিয়েছেন, বন্যায় আটকে পড়া বাসিন্দাদের কাছে বিমানে করে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
ওদিকে, প্রায় ৫০ জন শ্রমিক ও রোগীসহ বন্যার পানিতে আটকে পড়াদের উদ্ধারে নৌকা, হেলিকপ্টার ও বড় যানবাহন ব্যবহার করছেন কর্মকর্তারা। শক্তিশালী এ ঝড়ে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে পাঁচ রাজ্যের অন্তত ৩০ লাখ মানুষ।
বৃহস্পতিবার রাতে ক্যাটাগরি-৪ মাত্রার ঝড় হেলেন ফ্লোরিডা উপকূলে আঘাত হানে। এই আঘাতের পর ৬ ঘণ্টা ধরে ঝড়টি তাণ্ডব চালায়। ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড এলাকায় এর আগে এতো শক্তিশালী ঝড়ের আঘাত হানার ইতিহাস নেই।
ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, ফ্লোরিডা উপকূলের কিছু অংশে ১৫ ফুট (৪.৫ মিটার) পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা কমে আসবে, তবে ভূমিধস, তীব্র বাতাস ও বন্যার হুমকি থেকেই যাচ্ছে। কোথাও কোথাও ৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সিবিএস জানিয়েছে, প্রায় ৯৪ হাজার মানুষের আবাসস্থল এবং জনপ্রিয় পর্যটন ও শিল্পকলার কেন্দ্র অ্যাশভিল শনিবার জলাবদ্ধ ছিল।
জীবিতদের সন্ধান চলছে এবং ফ্লোরিডা ও জর্জিয়াসহ ছয়টি রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
শুক্রবার টেনেসির এরউইন শহরের একটি হাসপাতালের ছাদে ৫৮ জন রোগী ও কর্মী আটকা পড়েন। কিন্তু নদীর স্রোতের কারণে নৌকায় এবং ঝড়ো বাতাসের কারণে হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, “হারিকেন হেলেনের আঘাতে যে ধ্বংসযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করছি তা অপ্রতিরোধ্য।”
এর আগে ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন চলতি বছরের শুরুতে সতর্ক করে বলেছিল, ২০২৪ সালে ২৫টির মতো ঝড় হতে পারে।
এর মধ্যে আট থেকে ১৩টি ঝড় হারিকেনে পরিণত হতে পারে এবং হেলেনসহ কয়েকটি ঝড় ইতিমধ্যে হয়েছে। কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, হারিকেনের প্রাদুর্ভাব ৩০ নভেম্বরের আগে কমবে না।