অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে তিন দিনের জন্য পোপ ফ্রান্সিসের মৃতদেহ ভ্যাটিকানের সেইন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় রাখা হয়েছে।
Published : 24 Apr 2025, 02:04 PM
ভ্যাটিকানের সেইন্ট পিটার্স ব্যাসেলিকায় রাখা পোপ ফ্রান্সিসের মৃতদেহের প্রতি বুধবার শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজারো মানুষ।
শনিবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে তিন দিনের জন্য ফ্রান্সিসের মৃতদেহ ভ্যাটিকানের এই প্রধান গির্জায় রাখা হয়েছে।
রয়টার্স লিখেছে, রোম থেকে ভ্যাটিকানে যাওয়ার প্রধান সড়কজুড়ে বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন। বসন্তের উষ্ণ রোদের মধ্যে ধীরে ধীরে সেইন্ট পিটার্স ব্যাসেলিকার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা। যখন নিজের সময় আসছে উন্মুক্ত কফিনে শায়িত পোপকে একনজর দেখে নিচ্ছেন তারা।
গত সোমবার সকালে ভ্যাটিকানের সান্তা মার্তা অতিথিভবনের নিজ ঘরে ৮৮ বছর বয়সে পোপ মারা যান। বুধবার স্থানীয় সময় সকালে ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ এক মিছিলের মাধ্যমে তার মরদেহ সেইন্ট পিটার্স ব্যাসেলিকায় নিয়ে আসা হয়।
লাল টুপি পরা কার্ডিনালরা, বিশপরা, মোমবাতি বহনকারী পাদ্রিরা ও হেলমেটধারী সুইস রক্ষীরা পোপের কফিন নিয়ে ব্যাসেলিকার সামনের বিশাল চত্বরটি ধীরে ধীরে হেঁটে পার হন। এ সময় গির্জার গায়কদল লাতিন ভাষায় প্রার্থনা সংগীত গাইছিল আর একটি ঘণ্টা মৃদুভাবে বাজছিল।
কফিনটি সেইন্ট পিটার্স স্কয়ার পর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চত্বরে উপস্থিত কয়েক হাজার মানুষ করতালিতে ফেটে পড়ে, এ ধরনের অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধা জানানোর ঐতিহ্যবাহী ইতালীয় রীতি এটি।
ব্রিটেন থেকে আসা পূর্ণার্থী রাচেল ম্যাকে বলেন, “তিনি পরিবারের সদস্যের মতো। আমাদের হৃদয়ের খুব কাছাকাছি একজন। তিনি গির্জাকে সবার জন্য সুগম ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলেছিলেন।”
সাদা দস্তানা ও কালো স্যুট পরা ১৪ জন কফিনবহনকারীকে সহায়তা করেন ভ্যাটিকানের কর্মকর্তারা। কফিন নিয়ে তারা পিটার্স ব্যাসেলিকার বিশাল ব্রোঞ্জের দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করার পর কফিনটি অংলকৃত গিজার নীরব অভ্যন্তরে একটি পাথরের নিচু স্তম্ভে রাখা হয়।
জনতাকে ব্যাসিলিকার কেন্দ্রীয় প্রশস্ত বারান্দা দিয়ে নিয়ে এসে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
কফিনে শায়িত ফ্রান্সিসকে লাশ পোশাক পরনো হয়েছে, মাথায় সাদা পাগড়ি এবং তার হাত দুটো একসাথে একটি জপমালা ধরে আছে।
জনতার মধ্যে যারা প্রথম ফ্রান্সিসকে শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছেন তাদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা অ্যালেক্স ল্যানার্টজ। তিনি জানান, তার মিশ্র অনুভূতি হয়েছে।
“এটি এক ধরনের পরাবাস্তব অনুভূতি, মৃতদেহটি দেখা আর গুরুত্বপূর্ণ যা কিছুর পক্ষে তিনি দাঁড়িয়েছেন সেগুলো মনে করা,” বলেন তিনি।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা পর্যন্ত ফ্রান্সিসের মরদেহ সেইন্ট পিটার্স ব্যাসেলিকায় রাখা হবে। বুধবারের পরিদর্শন মধ্যরাতেই বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল ভ্যাটিকানের, কিন্তু মানুষ অনেক বেশি হওয়ায় সময় আরও বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছিল তারা।
এ দিনের প্রথম সাড়ে আট ঘণ্টায় প্রায় ১৯ হাজার ৪৩০ জন পোপের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তখনো আরও কয়েক হাজার মানুষ লাইনে অপেক্ষা করছিলেন।