যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনার জন্য ইসরায়েল আলোচক দল পাঠানোর পরও তারা এই অনড় অবস্থান জানাল।
Published : 27 Feb 2025, 10:27 PM
ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী গাজা-মিশর সীমান্তের ফিলাডেলফি করিডোর থেকে সেনা সরাবে না ইসরায়েল। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন।
যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনার জন্য ইসরায়েল আলোচক দল পাঠানোর পরও তারা এই অনড় অবস্থান জানাল।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে ইসরায়েলের ওই কর্মকর্তা বলেন, “আমরা ফিলাডেলফি করিডোর (সীমান্তের ১৪ কিলোমিটার করিডোর) থেকে সরব না।
“আমরা হামাস সন্ত্রাসীদেরকে আবার ট্রাক, রাইফেল নিয়ে আমাদের সীমান্তে চলাচল করতে দেবো না। আমরা তাদেরকে আবার চোরাচালানের মধ্য দিয়ে শক্তিশালী হতে দেব না।”
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওযার দিন কয়েক আগে এবং হামাস শেষ দফার জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এমন ঘোষণা এল।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার শেষ দিনে ফিলাডেলফি করিডোর থেক ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার কথা ছিল। ইসরায়েল এতে অস্বীকৃতি জানানোয় নড়বড়ে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ফের হুমকিতে পড়ল।
হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজা-মিশর সীমান্ত থেকে ইসরায়েলি সেনা সরানো না হলে তা যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন হবে এবং চুক্তি ব্যাহত করার অজুহাত তৈরি করার চেষ্টা হিসেবে দেখা হবে।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে শুরু হওয়ার কথা ছিল।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আলোচনা চালিয়ে যেতে মিশরের রাজধানী কায়রোয় একটি প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছেন।
তবে দলটি যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা করবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। দ্বিতীয় ধাপে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার করার শর্ত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এটি শুধু প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর আলোচনাও হতে পারে।
ওদিকে, হামাসের হাতে আটক ৩৮ জন জিম্মি এবং ইসরায়েলের হাতে আটক হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ শনিবার শেষ হচ্ছে।
ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা সিএনএন-কে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কেবল যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ বাড়ানো এবং গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার না করেই আরও জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত করতে চান। সরকার এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য প্রথম ধাপটি "যতটা সম্ভব" দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে।
হামাস কর্মকর্তা মাহমুদ মারদাওয়ি সিএনএন-কে বলেন, ফিলাডেলফি করিডোর থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ার কথা ছিল শনিবার, যুদ্ধবিরতির ৪২ তম দিনে, এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল ৯ মার্চ, ৫০ তম দিনে।
গত মে মাসে মিশর সীমান্ত সংলগ্ন করিডোরের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দফায়, ইসরায়েলের গাজা থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করার শর্ত রয়েছে, যার মধ্যে মিশর সীমান্তও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এরপর হামাসকে আরও ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে সব জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাতে মুক্তির জন্য নির্ধারিত চূড়ান্ত চার মৃত জিম্মিকে হস্তান্তরের পর হামাস দ্বিতীয় দফায় আলোচনা শুরুর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
জিম্মিদের বিষয় উল্লেখ করে হামাস জানিয়েছে, নেতানিয়াহু এবং তার সরকার চুক্তি থেকে পিছু হটা এবং এতে বাধা দেওয়ার যে কোনও চেষ্টা বন্দি এবং তাদের পরিবারের জন্য কেবল আরও দুর্ভোগের কারণ হবে।