মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রপন্থি প্রতিরোধ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে লড়াই করছে আর সামরিক শাসন বিরোধী হাজার হাজার লোককে গ্রেপ্তার করে চলছে।
Published : 17 Sep 2022, 02:05 PM
জনগণকে নিপীড়ন ও ভয় দেখিয়ে শাসন করা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছে রাজস্ব ও অস্ত্র পৌঁছানো থামাতে বিশ্বের দেশগুলোর আরও বেশি কিছু করা উচিত বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক অভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রপন্থি প্রতিরোধ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে লড়াই করছে আর সামরিক শাসন বিরোধী হাজার হাজার লোককে গ্রেপ্তার করে চলছে। একই সময় অভ্যন্তরীণ অশান্তি ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় চাপের মুখে পড়া অর্থনীতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে দেশটির সামরিক শাসকরা।
সামরিক জান্তা নির্বিচার হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে বলে অভিযোগ জাতিসংঘের। অপরদিকে জান্তা বলছে, তারা দেশের ক্ষতি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে আরও বিচ্ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, তারা অর্থবহ ও টেকসই উপায়ে দেশ পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক যেন বিদেশি মুদ্রা আয় করতে না পারে তার জন্য লক্ষ্য স্থির করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে ও তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোর প্রতি সুপারিশ জানিয়েছে মানবাধিকার দপ্তর।
প্রতিবেদনে তারা বলেছে, “মিয়ানমারের জনগণকে সমর্থন জানাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং দেশটির সামরিক বাহিনীকে আর্থিকভাবে বিচ্ছিন্ন করতে জানানো আহ্বানের জবাব দেওয়া।
“আগাম চতুর পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা কমাতে দ্রুত সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বিবেচনা করা উচিত।”
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও প্রতিবেশীদের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্য অব্যাহত আছে এবং বেশ কয়েকটি দেশ জান্তাকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া অব্যাহত রেখেছে।
চীন শত্রুতা শেষ করার আহ্বান জানালেও রাশিয়া দেশটির জেনারেলদের ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক মিত্র হয়ে আছে এবং অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের জান্তা প্রধানকে তিনটি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বরণ করেছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারকে যুদ্ধবিমান ও সাঁজোয়া যান দিয়েছে রাশিয়া, চীন যুদ্ধ ও পরিবহন বিমান সরবরাহ করেছে, সার্বিয়া রকেট ও গোলাগুলি দিয়েছে এবং ভারত একটি দূরবর্তী বিমান প্রতিরক্ষা স্টেশন তৈরিতে সহায়তা করেছে।