নিজস্ব পণ্যে তুলনামূলক বেশি মার্কিন যন্ত্রাংশ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে চিপ নির্মাতা কোম্পানি ব্রডকমের সঙ্গে চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল।
বহুবছর মেয়াদের এই চুক্তিতে মার্কিন কোম্পানি দুটি ৫জি ডিভাইসের বিভিন্ন উপাদান তৈরি করবে, যেগুলোর নকশা ও উৎপাদন হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই।
অ্যাপল বলছে, এই চুক্তি ২০২১ সালে কোম্পানির মার্কিন অর্থনীতিতে ৪৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ পরিকল্পনার অংশ।
দীর্ঘদিন ধরে চীনের সঙ্গে চলা বিরোধের কারণে চিপ উৎপাদন শিল্পে একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি নিজ দেশের সেমিকন্ডাক্টর খাত উন্নত করার লক্ষ্যে কয়েকশ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
চীনা উৎপাদক ও বিভিন্ন উপাদানের ওপর নির্ভরশীলতার কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের আইন প্রণেতাদের কাছ থেকেই ক্রমবর্ধমান তদন্তের মুখে পড়েছে বিভিন্ন মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট।
অ্যাপল ক্রমশ নিজেদের সরবরাহ চেইন বদলাচ্ছে, যেখানে এখন ভারত ও ভিয়েতনামের মতো দেশে তুলনামূলক বেশি আইফোন উৎপাদিত হচ্ছে।
গত বছর কোম্পানি বলেছে, তারা তাইওয়ান ভিত্তিক চিপ জায়ান্ট টিএসএমসি’র অ্যারিজোনা কারখানা থেকে নতুন সেমিকন্ডাক্টর কিনবে।
২০২২ সালে ভারতে আইফোন ১৪ তৈরির পরিকল্পনার ঘোষণা দেয় অ্যাপল। একে কোম্পানির উৎপাদন চীনের বাইরে নেওয়ার বেলায় ‘উল্লেখযোগ্য এক মাইলফলক’ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।
এই পদক্ষেপে ভারতে কোম্পানির উৎপাদন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমেও বিস্তার ঘটায়। ২০১৭ থেকেই তামিলনাড়ুতে আইফোন বানিয়ে আসছিল কোম্পানিটি।
গত মাসে ভারতের অর্থনৈতিক হাব মুম্বাই ও রাজধানী দিল্লীতে নিজেদের প্রথম ‘রিটেইল স্টোর’ উন্মোচন করে অ্যাপল।
আইফোন নির্মাতা কোম্পানির সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্কের বিস্তৃতি ঘটানো ব্রডকমের সর্বশেষ এই চুক্তি অনুসারে, কলোরাডো ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অংশে অ্যাপল ডিভাইসের বিভিন্ন উপাদানের নকশা ও উৎপাদন হবে।
“মার্কিন উৎপাদন ব্যবস্থার চাতুর্য, সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী চেতনাকে কাজে লাগায়, এমন প্রতিশ্রুতি দিতে পেরে আমরা সত্যিই রোমাঞ্চিত।” --এক বিবৃতিতে বলেন অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক।
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।
সপ্তাহের শুরুতে চীন বলেছে, মার্কিন চিপ জায়ান্ট মাইক্রন টেকনোলজির তৈরি পণ্য দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আর একে মার্কিন কোনো চিপ নির্মাতা কোম্পানির বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের আরোপ করা প্রথম বড় পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।