খাদ্য নিয়ে ক্ষতিকর পরামর্শ, ‘চাকরি গেল’ এআই চ্যাটবটের

যদিও টেসা একটি রোবট, আমরা আশা করেছিলাম, খাদ্য অনীহায় আক্রান্ত কাউকে অনুপ্রেরণা, সাহচর্য এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে এটি খানিকটা হলেও সাহায্য করবে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2023, 01:21 PM
Updated : 4 June 2023, 01:21 PM

খাদ্যে অনীহা বা ইটিং ডিসঅর্ডার বর্তমান পৃথিবীতে পরিচিত এক সংকটের নাম। এ ধরনের সমস্যায় পরামর্শের জন্য বানানো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর চ্যাটবট ‘টেসা’কে সরিয়ে দিয়েছে আমেরিকার ন্যাশনাল ইটিং ডিসঅর্ডার অ্যাসোসিয়েশন (নেডা)।

অভিযোগ, এ সমস্যায় আক্রান্তদের ক্ষতিকর পরামর্শ দিয়েছে এই চ্যাটবট।

অধিকারকর্মী শ্যারন ম্যাক্সওয়েল তার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লেখেন, তাকে “স্বাস্থ্যকর আহারের উপদেশ” দিয়েছে চ্যাটবট টেসা এবং বুদ্ধিও বাতলে দিয়েছে কীভাবে ওজন কমানো যায়। যেখানে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি ছিলো পাঁচশো থেকে হাজার কিলো ক্যালোরি পর্যন্ত।

তিনি বলেন, “অসম্ভব ইটিং ডিজঅর্ডারের সময়ে আমি চ্যাটবটির পরামর্শ মানলে তা কোনো কাজে তো আসতোই না, এমনকি আমি মারাও যেতে পারতাম।”

“এটিকে এখনই বন্ধ করে দিতে হবে।”

“গতরাতে আমরা জানতে পারি আমাদের টেসা চ্যাটবটটির বর্তমান সংস্করণটি ‘ওজন হ্রাসের’ এক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এটি ঝুঁকিপূর্ণ পরামর্শ দিতে পারে যা আমাদের মূল কার্যক্রমের সঙ্গে সাংঘর্ষিক” মঙ্গলবারে প্রকাশিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলে নেডা।

“আমরা চ্যাটবটটিকে সাময়িকভাবে বন্ধ করে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে দেখছি। পূর্ণাজ্ঞ তদন্তের পর আমরা আমাদের মতামত প্রকাশ করবো।”

‘কাস এআই’ নামের একটি কোম্পানি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক এআই চ্যাটবট তৈরি করে। কোম্পানিটি গবেষকদের সঙ্গে মিলে টেসা চ্যাটবটটি বানিয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে।

ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি ইন সেইন্ট লুয়ি’র মনোবিজ্ঞানী অ্যালেন ফিটজমন-ক্রাফট যুক্ত ছিলেন টেসা তৈরির সঙ্গে। নেডার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক পোস্টে তিনি বলেছেন, তাদের ধারণা ছিল চ্যাটবটটি খাদ্যে অনীহা দূর করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।

“যেসব কার্যক্রমে মানব ও অন্যান্য সম্পদ কাজে লাগে সেগুলো সহজসাধ্য নয়, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থায় যেখানে নিরাময়ে বিনিয়োগ সীমিত।”

ফিটজমন-ক্রাফট বলেন, “সেই তুলনায় সরাসরি একজন মানুষের থেকে সেবা নেওয়া বেশি কার্যকরী হয়। যদিও টেসা একটি রোবট, আমরা আশা করেছিলাম, খাদ্য অনীহায় আক্রান্ত কাউকে অনুপ্রেরণা, সাহচর্য এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে এটি খানিকটা হলেও সাহায্য করবে। এতে আরও বেশি সংখ্যক আক্রান্ত ব্যাক্তি নেডার সঙ্গে যুক্ত হবে।”

এদিকে নেডার সিইও লিজ থমসন গার্ডিয়ানকে বলেন, চ্যাটবটটি মানুষচালিত হেল্পলাইন সেন্টারের বিকল্প নয় বরং এটি ভিন্ন একটি প্রকল্প। তিনি নিশ্চিত করেন, চ্যাটবটটি চ্যাটজিপিটি চালিত নয় এবং “খুব একটা উন্নত এআই প্রযুক্তিও নয়।

“হেল্পলাইন কার্যক্রম বন্ধ করার পেছনে আমাদের ব্যবসায়ীক কারণ ছিল। আমরা তিন বছর ধরে এর মূল্যায়ন করছিলাম।” তিনি আরও যোগ করেন, “এমনকি খুবই বুদ্ধিমান চ্যাটবটও মানুষের বিকল্প হতে পারবে না।”

অপরদিকে গত মার্চে হেল্পলাইনে কাজ করা কর্মীদেরকে শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনের অভিযোগে ছাঁটাই করার পরে সমালোচনার মুখে পড়ে কোম্পানিটি।