ডারউইনের ব্যক্তিগত বইয়ের ভাণ্ডার আসছে অনলাইনে

তিনশ পৃষ্ঠার এই বইয়ের ক্যাটালগটি ডারউইনের ব্যক্তিগত বইয়ের বিশদ বিবরণ দেবে, যেখানে আছে সাত হাজার চারশটি শিরোনাম ও ১৩ হাজার পর্ব।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Feb 2024, 02:56 PM
Updated : 12 Feb 2024, 02:56 PM

প্রথমবারের মতো অনলাইনে প্রকাশ পেতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের প্রকৃতিবিদ ও জীববিজ্ঞানী চার্লস রবার্ট ডারউইনের বিশাল ব্যক্তিগত বইয়ের গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরি।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশাল এ বই ভাণ্ডারের বেশিরভাগই এখন পর্যন্ত অজানা বা অপ্রকাশিত ছিল, যেখানে ডারউইন তার গবেষণার ‘অসাধারণ মাত্রা’ দেখিয়েছেন।

তিনশ পৃষ্ঠার এই বইয়ের ক্যাটালগটি ডারউইনের ব্যক্তিগত বইয়ের বিশদ বিবরণ দেবে, যেখানে আছে সাত হাজার চারশটি শিরোনাম ও ১৩ হাজার পর্ব।

এর আগে ডারইউনের প্রকাশিত বইয়ের তালিকার কেবল ১৫ শতাংশ বই অন্তর্ভুক্ত ছিল এই লাইব্রেরিতে, যার মধ্যে জীববিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব, দর্শন, মনোবিজ্ঞান ও ধর্মের পাশাপাশি শিল্প, ইতিহাস ও ভ্রমণের মতো বই, প্যামফলেট (সমসাময়িক সমস্যা নিয়ে লেখা বই) ও জার্নাল আছে।

এ সংগ্রহে একটি জার্মান সাময়িকী রয়েছে, যেখানে ব্যাকটেরিয়ার প্রথম পরিচিত ছবিও দেখা যাবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।

এ লাইব্রেরির বেশিরভাগ বই ইংরেজি ভাষার হলেও এর প্রায় অর্ধেকের ভাষা জার্মান, ফরাসী, ইতালীয়, স্প্যানিশ, ডাচ ও ডেনিশ’সহ অন্যান্য ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল।

‘দ্য কমপ্লিট ওয়ার্ক অফ চার্লস ডারউইন’ নামের অনলাইন প্রকল্পটির কাজ  চলেছে ১৮ বছর ধরে, যা প্রকাশ পেল ডারউইনের ২১৫তম জন্মদিনে।

প্রকল্পের নেতৃত্বে ছিলেন ‘ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুর (এনইউএস)’-এর ‘বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস’ বিভাগের অধ্যাপক ড. জন ভ্যান ওয়াই।

তিনি বলেন, “ডারউইনের সম্পূর্ণ বইয়ের এ অভূতপূর্ব দৃষ্টিভঙ্গি মানুষকে বোঝাতে সাহায্য করবে যে, তিনি এমন ব্যক্তিত্ব ছিলেন না যিনি একা কাজ করতেন, বরং তার সময় হাজার হাজার মানুষের অত্যাধুনিক বিজ্ঞান, অধ্যয়ন ও অন্যান্য জ্ঞান সম্পর্কে জানা একজন বিশেষজ্ঞ ছিলেন।”

“প্রকৃতপক্ষে, এ লাইব্রেরির কাজের আকার ও পরিসর থেকে অন্যদের কাজ নিয়ে ডারউইনের গবেষণার অসাধারণ মাত্রার বিষয়টি ফুটে ওঠে।”

প্রকল্পটিতে ভার্চুয়াল উপায়ে এই লাইব্রেরিটিকে পুনর্গঠন করা হয়েছে, যেখানে ডারউইনের কাজের ৯ হাজার তিনশটি লিঙ্কের কপি আছে।

ডারউইন ১৮৮২ সালে মারা যান। মৃত্যুর পর তার বাড়িতে থাকা গ্রন্থাগারে পাওয়া গিয়েছিল দুই হাজারের বেশি বই।

প্রকল্পটিতে ১৮৭৫ সালে ডারউইনের হাতে লেখা এক ক্যাটালগের ৪২৬টি পৃষ্ঠা ব্যবহার করেছেন গবেষকরা। পাশাপাশি, তার ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে থাকা ৪৪০টি অজানা শিরোনামও সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ পেয়েছে এতে।

ডারউইনের এ বিশাল লাইব্র্রেরির অন্যান্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে প্যামফলেটের তালিকা, ডারউইনের পড়ার নোটবুক, তার স্ত্রী এমা’র ডায়েরি।

পাশাপাশি, ১৯০৮ সালে ‘কেমব্রিজ বোটানি’ স্কুলকে দেওয়া বই ও গোটা বিশ্বের মানুষদের কাছে ডারউইনের পাঠানো ‘ডারউইন করেসপন্ডেন্স’ নামের এক চিঠি সংগ্রহের ৩০টি খণ্ডও রয়েছে এতে।