ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুল ব্যবহার করে ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে হাবল টেলিস্কোপের দূরত্ব আরও বাড়ানো যায় কি না, জানতে চায় স্পেসএক্স। আর এ প্রশ্নের উত্তর পেতে নাসাকে প্রয়োজনীয় গবেষণার তহবিলও জোগান দেবে ইলন মাস্কের এই কোম্পানি।
হাবলকে ভূপৃষ্ঠ থেকে আরও উঁচুতে পাঠানো সম্ভব হলে আরও বেশি দিন ব্যবহার করা যাবে স্পেস টেলিস্কোপটি। আর সে লক্ষ্যকে সামনে রেখেই বৃহস্পতিবার স্পেসএক্সের সঙ্গে নতুন গবেষণা জোটের ঘোষণা দিয়েছে নাসা।
‘ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)’-এ নাসার নভোচারীদের আনা-নেওয়া করে এবং কার্গো পরিবহন করে এরই মধ্যে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির আস্থা অর্জন করেছে স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুল।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হাবলের উচ্চতা বাড়ানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্পেসএক্স ছয় মাসের একটি গবেষণা প্রকল্পের তহবিল যোগান দেবে বলে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছেন নাসার বিজ্ঞান অধিদপ্তরের প্রধান থমাস জারবাখেন।
“কয়েক মাস আগে একটি বাণিজ্যিক ক্রু কীভাবে হাবল স্পেসক্র্যাফটের উচ্চতা বাড়াতে সহযোগিতা করতে পারে, যাতে এর কার্যক্ষমতার আয়ু আরও বাড়ে, সে বিষয়ে গবেষণার প্রস্তাব নিয়ে নাসার কাছে এসেছিল স্পেসএক্স”-- সংবাদকর্মীদের বলেন তিনি।
মহাজাগতিক মানমন্দির হিসেবে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে মহাকাশ গবেষকদের নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে কাজ করেছে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ। মহাকাশের বিভিন্ন কোণের ছবি তোলা, প্লুটোর চাঁদ আর মহাবিশ্বের শেষ সীমানার মতো একাধিক তাৎপর্যপূর্ণ আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে টেলিস্কোপটি।
নাসা জানিয়েছে, ‘আদৌ টেলিস্কোপের কাছে নিরাপদে পৌঁছে, ডক করে, আরও স্থিতিশীল কক্ষপথে নেওয়া সম্ভব হবে কি না, সেটা নির্ধারণে সহযোগিতা করবে’ নতুন প্রকল্পের গবেষক দল।
২০০০ সাল থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস শাটল প্রকল্পের অংশ হিসেবে একাধিকবার হাবল টেলিস্কোপ সারাইয়ের কাজ করেছে নাসা। ২০১১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্পেস শাটল প্রকল্পের উপসংহার টেনেছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি; কিন্তু এখনও কার্যক্ষম আছে হাবল।
তারপর থেকেই স্পেস টেলিস্কোপটি সারাইয়ের নানা উপায় নিয়ে ভাবছেন মহাকাশ গবেষকরা। তবে এখনও কোনো নির্ভরযোগ্য পরিকল্পনা দাঁড় করানো সম্ভব হয়নি।
রয়টার্স জানিয়েছে, হাবল টেলিস্কোপে ডক করার জন্য এবং ঠেলে আরও ওপরে ওঠানোর জন্য ড্রাগন ক্যাপসুলে কোনো পরিবর্তন আনতে হবে কি না, সে প্রশ্নটি আছে গবেষণার বিষয়বস্তুর মধ্যে। আর এ কাজে কোনো নভোচারীর সশরীরে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন আছে কি না, সে বিষয়টিও বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখা হবে।
“এ পর্যায়ে সম্ভাব্য সব কিছুই ভেবে দেখা হচ্ছে” বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন স্পেসএক্সের কাস্টমার অপারেশনস ভাইস প্রেসিডেন্ট জেসিকা জেনসেন।
তবে, সংবাদ সম্মেলনে নাসা গুরুত্ব দিয়ে একটি বিষয় উপস্থাপন করেছে – স্পেসএক্সের তহবিলেই কোম্পানিটির সঙ্গে জোট বেঁধে গবেষণা চালানোর সমঝোতা হয়েছে নাসার; ভবিষ্যতে হাবল সারাইয়ের কোনো চুক্তি এটি নয়।