এটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন আরও বেশি সংখ্যক মানুষ স্বাস্থ্য পরামর্শের জন্য চ্যাটজিপিটির মতো অনলাইন টুলের দিকে ঝুঁকছে।
Published : 08 Apr 2024, 05:49 PM
জনপ্রিয় চ্যাটবট চ্যাটিজিপিটি’র কাছে যত বেশি স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্য জানতে চাওয়া হয়, এর জবাবগুলো ভুল হওয়ার ঝুঁকিও তত বেশি, এমনই উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।
এই যুগান্তকারী গবেষণায় গবেষকরা এআই প্রযুক্তি, বিশেষ করে চ্যাটজিপিটি’র স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেওয়ার পদ্ধতিতে একটি আকর্ষণীয় মোড় খুঁজে পেয়েছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, চ্যাটজিপিটিকে বিস্তারিতভাবে তথ্য-প্রমাণ দেওয়া হলে, এর দেওয়া বিভিন্ন উত্তরের নির্ভরযোগ্যতা কমে যায়।
এ গবেষণায়, কিছু ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটির সঠিক তথ্য দেওয়ার হার ২৮ শতাংশে নেমে যায়।
‘কম্পিউটার কীভাবে মানুষের ভাষা প্রক্রিয়াকরণ করে’-তার জবাব খোঁজায় নিয়োজিত এক গবেষণামূলক সম্মেলনে এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে।
গবেষণা দলটিতে কাজ করেছেন ‘অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিজ্ঞান সংস্থা’ ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ড’-এর বিশেষজ্ঞরা।
এ গবেষণায় তারা একশটি আলাদা ধরনের স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে চ্যাটজিপিটি’র পরীক্ষা নেন। এতে বিভিন্ন সাধারণ প্রশ্ন যেমন সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে জিংকের কার্যকারিতা থেকে শুরু করে ভিনেগার পান করলে গলায় আটকে থাকা মাছের কাঁটা বের হবে কি না, চ্যাটবটকে এমন উদ্ভট প্রশ্নও করেছেন গবেষকরা।
এ গবেষণার ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা, এটি এমন সময় প্রকাশিত হল যখন আরও বেশি মানুষ স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ পেতে চ্যাটজিপিটি’র মতো টুলের দিকে ঝুঁকছে।
সহজে ব্যবহার করা যায় এমন বিভিন্ন এআই টুল থেকে তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি প্রতিনিয়ত জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও, সেগুলোতে দেখানো স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
এ গবেষণায়, চ্যাটজিপিটিকে দুটি উপায়ে প্রশ্ন করা হয়। একটি সেটে শুধু প্রশ্ন রাখা হলেও অন্যটিতে অতিরিক্ত প্রমাণ হিসেবে এমন কিছু তথ্য ছিল, যেটি হয় প্রশ্নটিকে সমর্থন করবে বা এর বিরোধিতা করবে।
মজার বিষয় হল, চ্যাটজিপিটিকে যখন শুধু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়, তখন এর নির্ভুলতার হার ছিল ৮০ শতাংশ। তবে, যখনই এতে অতিরিক্ত তথ্যপ্রমাণ যোগ করা হয়, তখন এর সঠিক উত্তর দেওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যায়।
চ্যাটজিপিটি’র এ প্রবণতা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন চ্যাটবটটিকে বিভিন্ন উত্তরে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
তবে, চ্যাটজিপিটির উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে এর নির্ভুলতা কমে যাওয়ার কারণ পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। গবেষকদের ধারণা বলছে, অতিরিক্ত তথ্য এআইয়ের কাছে বিভ্রান্তিকর হতে পারে, যার ফলে সঠিক জবাব দেওয়া জটিল হয়ে ওঠে।
গবেষণাটির মাধ্যমে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব উঠে এসেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। এ সম্পর্কিত গবেষণা চালিয়ে যাওয়া ও চ্যাটজিপিটি’র মতো এআই কীভাবে কাজ করে, তা বোঝার চেষ্টা করা। বিশেষ করে যখন চ্যাটজিপিটির মতো বিভিন্ন এআই ব্যবস্থা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য খোঁজার জন্য সাধারণ টুল হয়ে উঠেছে।
এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে ‘কনফারেন্স অন ইম্পিরিক্যাল মেথুডস ইন ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং’ সম্মেলনের ২০২৩ সালের সংস্করণে।