আড়াই হাজার কর্মীর চাকরি যাচ্ছে পেপাল থেকে

ডিসকর্ড, ইবে, রায়ট গেইমস, টিকটক, মাইক্রোসফট, আইরোবট, অ্যামাজন, ইউনিটি ও ডুওলিঙ্গো’সহ বেশ কিছু কোম্পানি জানুয়ারিতে হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2024, 01:44 PM
Updated : 31 Jan 2024, 01:44 PM

প্রায় আড়াই হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের দিকে এগোচ্ছে মার্কিন বহুজাতিক আর্থিক সেবাদাতা কোম্পানি পেপাল।

মঙ্গলবার কোম্পানির প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স ক্রিস এক চিঠিতে কর্মীদের বলেছেন, সম্ভাব্য ছাঁটাইয়ের সংখ্যাটি কোম্পানির সামগ্রিক কর্মী সংখ্যার প্রায় নয় শতাংশ। এর কয়েক ঘণ্টা পরই এ তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করে পেপাল।

এর আগে মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে উঠে আসে, এই সিদ্ধান্তের আওতাধীন আড়াই হাজার কর্মী এ সপ্তাহের মধ্যেই নিজেদের ভাগ্য জানতে পারবেন।

কোম্পানির খরচ কমানোর বিষয়টিকে কারণ দেখিয়ে গত বছরও দুই হাজারের বেশি কর্মীকে ছাঁটাই করেছিল পেপাল। এর ঠিক এক বছর পরই কোম্পানিটি থেকে ফের কর্মী ছাঁটাইয়ের খবর এল।

কেবল পেপাল নয়, ২০২৩ সালের মতো ২০২৪ সালেও বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির ছাঁটাইযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। এক বছর আগে পেপালের সর্বশেষ ছাঁটাইয়ের একইদিনে ‘ক্যাশ অ্যাপ’, ‘ফাউন্ডেশনাল’ ও ‘স্কয়ার’-এর মালিক কোম্পানি অর্থাৎ জ্যাক ডরসি’র ব্লক দুই মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার ছাঁটাইযজ্ঞ চালায়, যার ফলে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় এক হাজার কর্মী।

অন্যদিকে, এ মাসের শুরুতে নিজেদের অ্যাসিস্ট্যান্ট ও হার্ডওয়্যার বিভাগ থকে এক হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে গুগল। পাশাপাশি কোম্পানিটির সিইও সুন্দার পিচাই কর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন, সারা বছর ধরেই এ কর্মী ছাঁটাইয়ের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আর এজন্য কোম্পানির কর্মীদের প্রস্তুত থাকার কথাও বলেছেন তিনি।

বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি যেমন- ডিসকর্ড, ইবে, রায়ট গেইমস, টিকটক, মাইক্রোসফট, আইরোবট, অ্যামাজন, ইউনিটি ও ডুওলিঙ্গো’সহ বেশ কিছু কোম্পানি জানুয়ারিতে হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে।

অনলাইনে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে আর্থিক লেনদেনে প্রথম দিকের সেবাদাতা কোম্পানি পেপাল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ বাজারে প্রবেশ করেছে মার্কিন ডিজিটাল পেমেন্ট নেটওয়ার্ক কোম্পানি ‘জেলে’ ও অ্যাপলের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি, যার ফলে পেমেন্ট খাতে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি পেপালের ওপরও চাপ তৈরি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি সাইট এনগ্যাজেট।

ব্লুমবার্গ বলছে, এ মাসে চারজন প্রযুক্তি বিশ্লেষক শেয়ার বাজারে পেপালের রেটিং কমিয়েছেন। তবে কোম্পানির সিইও ক্রিস এক চিঠিতে লিখেছেন, “ব্যবসার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে পেপাল। আর আমরা বিশ্বাস করি, এ সিদ্ধান্ত পেপালের প্রবৃদ্ধি তৈরির গতিকে ত্বরান্বিত করবে।”

২০২৩ সালজুড়ে কোম্পানি আর্থিক অগ্রগতি ইতিবাচক হওয়া সত্ত্বেও পেপাল এখনও কর্মী ছাঁটাই করছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির আয় ছিল ৭৪২ কোটি ডলার, যা এক বছর আগের আয়ের তুলনায় আট শতাংশেরও বেশি। আর এ সংখ্যা কোম্পানির আয়ের প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে যাওয়ায় নিজেদের লেনদেনের খাতে ‘ডাবল ডিজিট বৃদ্ধি’ হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে কোম্পানিটি।

পেপালের বর্তমান সিইও ক্রিস কোম্পানিটির দায়িত্ব পেয়েছেন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। একই বছরের নভেম্বরে পেপালের শেষ আয় সভায় তিনি বলেন, কোম্পানিটির খরচ ‘খুব বেশি হওয়ায় এটি আমাদের অগ্রগতিকে ধীর করে দিচ্ছে।’