চিঠিতে কর্মীরা দাবি করেছিলেন, কোম্পানির বৈচিত্র্য এবং কর্মক্ষেত্রে অসদাচরণ বিষয়ক নীতির সঙ্গে মাস্কের বিবৃতির মিল নেই।
Published : 04 Jan 2024, 04:30 PM
স্পেসএক্স প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ইলন মাস্ককে ‘বিভ্রান্ত এবং বিব্রতকর’ বলে একটি চিঠি প্রচার করেছিলেন কোম্পানিটির আটজন কর্মী। ওই কর্মীরা বরখাস্ত হয়েছেন কোম্পানি থেকে।
আট কর্মীর ওই ছাঁটাই অবৈধ বলে অভিযোগ করেছে মার্কিন শ্রম সংস্থা ‘ন্যাশনাল লেবার রিলেশনস বোর্ড’ (এনএলআরবি)।
শ্রমিকদের একজোট হয়ে ভালো কাজের পরিবেশ দাবি করার অধিকার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল শ্রম আইনের অধীনে। এ ছাঁটাইয়ের ফলে স্পেসএক্স সে অধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির একজন আঞ্চলিক কর্মকর্তা।
২০২২ সালের জুনে স্পেসএক্স-এর নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো কর্মীদের ওই চিঠিতে ২০২০ সাল থেকে মাস্কের করা একাধিক টুইটের ওপরে নজর দেওয়া হয়। সেসব টুইটের মধ্যে বেশ কয়েকটি ছিল যৌন পরামর্শমূলক।
চিঠিতে কর্মীরা দাবি করেছিলেন কোম্পানির বৈচিত্র্য এবং কর্মক্ষেত্রে অসদাচরণ বিষয়ক নীতির সঙ্গে মাস্কের বিবৃতির মিল নেই। পাশাপাশি, স্পেসএক্সকে এসবের নিন্দা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন তারা।
ওই অভিযোগে এ চিঠি সম্পর্কে কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা, জড়িত কর্মীদের অপমান করার পাশাপাশি এ ধরনের কার্যকলাপের ফলে কর্মীদের ছাঁটাইয়ের হুমকি দেওয়ারও নালিশ এসেছে স্পেসএক্সের বিরুদ্ধে।
এ প্রসঙ্গে রয়টার্সকে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি স্পেসএক্স।
স্পেসএক্সের একটি ‘বিষাক্ত সংস্কৃতি’ রয়েছে যেখানে হয়রানি মেনে নেয়া হয়, বিশেষ করে নারীদের বিরুদ্ধে; ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের একজন, ডেবোরা লরেন্স, তার আইনজীবিদের কাছে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন।
“আমরা বিদ্বেষের জায়গা থেকে ওপরমহলে চিঠি দেইনি, আমাদের মিশন ও চারপাশের মানুষের কথা চিন্তা করেই দিয়েছি” – বলেন লরেন্স।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম আইন অনুসারে এনএলআরবি-এর প্রধান কৌসুলী শ্রমিকদের জন্য উকিলের মতো কাজ করেন এবং এ ধরনের অভিযোগ সে দেশের প্রেসিডেন্টের নিযুক্ত পাঁচ সদস্যের বোর্ডের কাছে উপস্থাপন করেন।
স্পেসএক্স নিষ্পত্তি না করলে একজন প্রশাসনিক বিচারক মামলাটির শুনানি করবেন। সেখানে আসা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যেতে পারে বোর্ডে এবং তারপর ফেডারেল আপিল আদালতে।
৫ মার্চ এই অভিযোগে শুনানির দিন ধার্য করা রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
যদি এনএলআরবি দেখে ছাঁটাইয়ের ফলে শ্রম আইন লঙ্ঘন হয়েছে তবে কর্মীদের চাকরি ও বেতন ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও, আইন লঙ্ঘন হয়েছে এমন প্রমাণ মিললে ভবিষ্যতে বোর্ডের সামনে আরও কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে স্পেসএক্স।
ইলন মাস্ক পরিচালিত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে শ্রম ও কর্মসংস্থান আইনের অধীনে থাকা কর্মীদের অধিকার লঙ্ঘনের সর্বশেষ অভিযোগ এটি।
এর আগে স্পেসএক্সের বিভিন্ন কারখানায় কমপক্ষে ছয়শ’টি আঘাতের ঘটনার তালিকা করেছে রয়টার্স যেগুলো অপ্রকাশিত ছিল। এর মধ্যে একটি মৃত্যুসহ রয়েছে হাড় ভাঙ্গা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, মাথায় আঘাত পাওয়ার মতো মর্মান্তিক সব ঘটনা। গেল নভেম্বরের এ নথি প্রসঙ্গেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি কোম্পানিটি।