ডিজনির এআই অভিনয়শিল্পীর বয়স বদলে দেবে মুহূর্তেই

শিল্পীর মুখের কোন অংশগুলোতে বয়সের ছাপ পড়ার কথা, তা আঁচ করার চেষ্টা করে ফ্র্যান। তার ভিত্তিতে প্রতি ফ্রেমে অভিনয়শিল্পীর মুখের খুঁটিনাটি পাল্টে দেয়।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2022, 10:14 AM
Updated : 2 Dec 2022, 10:14 AM

পোস্টপ্রোডাকশনে সময় বাঁচাতে নতুন ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)’ টুল বানিয়েছে ডিজনি রিসার্চ স্টুডিওস; মুহূর্তে অভিনয়শিল্পীর বয়স বাড়াতে বা কমাতে পারে তাদের এই ‘ফেইস রি-এজিং নেটওয়ার্ক’ বা ফ্র্যান।

সম্প্রতি নিজেদের সাফল্যের খবর এক গবেষণা প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছেন ডিজনি রিসার্চ স্টুডিওসের গবেষকরা।

ফ্র্যান আদতে একটি নিউরাল নেটওয়ার্ক। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, ফ্র্যানকে প্রশিক্ষণ দিতে জোড়ায় জোড়ায় বিভিন্ন বয়সের কৃত্রিম চেহারার ছবি সংগ্রহ করে নির্মিত একটি বিশাল ডেটাবেইজ ব্যবহার করেছেন গবেষকরা। এর ফলে বিভিন্ন বয়সের হাজারো মানুষের এক জোড়া করে ছবি সংগ্রহের ঝক্কি তারা এড়াতে পেরেছেন।

রক্ত-মাংসের অভিনয় শিল্পীর মুখের কোন অংশগুলোতে বয়সের ছাপ পড়ার কথা, তা প্রশিক্ষণের ভিত্তিতে আঁচ করার চেষ্টা করে ফ্র্যান। তারপর প্রতি ফ্রেমে অভিনয়শিল্পীর মুখের খুঁটিনাটি পাল্টে দেয়। এভাবে ভিডিওতে অভিনয়শিল্পীর বয়স বাড়ানো বা কমানো দুটোই করতে পারে ফ্র্যান।

ফ্র্যানের সক্ষমতাকে ‘ভিডিওতে চেহারার বয়স পরিবর্তনের জন্য বিশ্বের প্রথম ব্যবহারিক, সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এবং প্রযোজনাবান্ধব কৌশল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ডিজনি রিসার্চ স্টুডিওসের গবেষকরা।

এআইটি টুলের কার্যক্ষমতার প্রমাণ দেখাতে ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবেও পোস্ট করেছে ডিজনি। তবে এআই টুলের সীমাবদ্ধতার কথাও তারা বলেছে।

অভিনয়শিল্পীর মুখাবয়ব প্রাপ্তবয়স্ক থেকে শিশু বয়সে নিতে চাইলে বা একদম উল্টোটা করতে চাইলে কাজ করবে না ফ্র্যান। বয়সের সঙ্গে চুল পাকা বা পড়ে যাওয়ার বিষয়টিও উঠে আসবে না ফ্র্যানের কাজে।

অর্থাৎ, হলিউডি মেকআপ আর্টিস্টদের অনেকেরই শিগগিরই কাজ হারানোর আশঙ্কা নেই বলে মন্তব্য করা হয়েছে ভার্জের প্রতিবেদনে।

ডিজনি যে খানিকটা হলেও চুপিসারে এআই নির্ভর ভিজুয়াল ইফেক্ট টুল নিয়ে কাজ করছিল, তাতেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। সিনেমা শিল্পে ভিজুয়াল ইফেক্টের ক্ষেত্রে ডিজনির কাজ সেরা হিসেবেই একরকম স্বীকৃত।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মারভেল সিনেমাটিক ইউভার্সের গল্পের প্রয়োজনে নিক ফিউরি, হ্যাঙ্ক পিম এবং ইগো দ্য লিভিং প্ল্যানেট-এর মত চরিত্রগুলোর অভিনেতাদের বয়স বাড়িয়ে-কমিয়ে দর্শকদের চমৎকার অভিজ্ঞতা উপহার দিয়েছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি।

এর আগেও ভিডিওতে মানুষের চেহারা পাল্টানোর জন্য এআইকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ডিজনি; ২০২০ সালে একটি ডিপফেইক টুলও প্রকাশ করেছিলেন তাদের গবেষকরা।

আগের এআইয়ের সঙ্গে ফ্র্যানের মূল পার্থক্য হচ্ছে, নিউরাল নেটওয়ার্কটি ভিডিওতে যে পরিবর্তন আনে, তা প্রথম দেখায় পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য। 

তবে ডিজনি এআই টুলটি আদৌ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করবে কি না, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে ভার্জ।