যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থার ঝুঁকি তালিকায় এআই প্রযুক্তি

ছবি: রয়টার্স

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান বিকাশে ঠিকমতো নজর না দিলে এটি যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থায় নতুন ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে --এমনই সতর্কবার্তা দিয়েছে মার্কিন নিয়ন্ত্রকদের এক প্যানেল।

বৃহস্পতিবার মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ফাইনান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি ওভারসাইট কাউন্সিল (এফএসওসি)’র প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো এআই প্রযুক্তিকে মার্কিন আর্থিক ব্যবস্থার সম্ভাব্য ঝুঁকি তালিকায় যুক্ত করেছেন কাউন্সিল প্রধান জ্যানেট ইয়েলেন।

প্যানেল বলেছে, ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় উদ্ভাবন বা দক্ষতা বাড়ানোর সম্ভাবনা আছে এআই প্রযুক্তির। তবে, এ উদিয়মান প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশের ওপর নজর রাখা উচিৎ বিভিন্ন কোম্পানি ও নিয়ন্ত্রক উভয় পক্ষেরই।

“এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে যেসব ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে সাইবার ও এআই মডেলের নিরাপত্তা ঝুঁকির মতো বিষয়গুলো।” --বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।

এর পাশাপাশি, বিভিন্ন কোম্পানি ও নিয়ন্ত্রকদের ‘বিশেষজ্ঞ দক্ষতা বাড়ানোর ও এআই উদ্ভাবন ও ব্যবহারে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো শনাক্ত করার’ পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি।

এ ছাড়া, ব্যাংক নয় এমন কোম্পানির আর্থিক খাতে কার্যক্রম বৃদ্ধি এবং বেসরকারী ঋণের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিতেও মনযোগ দিতে বলেছে সংস্থাটি। তারা আরও যোগ করে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলোও খতিয়ে দেখা উচিৎ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও নিয়ন্ত্রকদের।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিছু কিছু এআই পণ্য অত্যন্ত প্রযুক্তিগত ও অস্পষ্ট হতে পারে, যার ফলে কোম্পানিগুলোর পক্ষে এর সম্ভাব্য ত্রুটিগুলো ব্যাখ্যা করা বা সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা জটিল হয়ে ওঠে। আর যখন কোনো কোম্পানি ও নিয়ন্ত্রক এআই টুলের কার্যক্রম পুরোপুরি বুঝতে না পারে, তখন এর থেকে সৃষ্ট পক্ষপাতমূলক বা ভুল ফলাফল শনাক্ত করতে না পারার ঝুঁকি থাকে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন এআই টুল ব্যাপকভাবে নির্ভর করে বাইরের ডেটাসেট ও থার্ড পার্টি তথ্যের ব্যবস্থার ওপর, যা এর নিজের প্রাইভেসি ও সাইবার নিরাপত্তার জন্যেও ঝুঁকিপূর্ণ।

বিভিন্ন এআই কোম্পানি কীভাবে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে, তা নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে মার্কিন সংস্থা ‘এসইসি’সহ প্যানেল পর্ষদের কয়েকজন নিয়ন্ত্রক। অন্যদিকে, এআই প্রযুক্তির সম্ভাব্য ঝুঁকি ঠেকানোর লক্ষ্যে সম্প্রতি একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছে হোয়াইট হাউজও।

প্রতিবেদনে সংগঠনটি আরও বলেছে, এ বছর বিভিন্ন শীর্ষ ব্যাংকে বড় ধস নামার পরও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং ব্যবস্থা এখনও বহাল তবিয়তে আছে। তবে, ব্যাংকে বীমাবিহীন অর্থ জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রকদের ঘনিষ্টভাবে নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছে ‘এফএসওসি’।