যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের অংশ হিসাবে দুই দেশই একে অপরের বিভিন্ন পণ্যের ওপর চড়া বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করেছে।
Published : 18 Apr 2025, 02:29 PM
মার্কিন সরকার চীনে রপ্তানি নীতিমালা কঠোর করায় কম্পিউটার চিপ জায়ান্ট এনভিডিয়ার শেয়ার বাজারে সাড়ে পাঁচশ কোটি ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে পারে– এমন খবর প্রকাশের পর এনভিডিয়ার শেয়ারের দামে ধস নেমেছে।
কঠোর নীতিমালার কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই বিকাশের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা মার্কিন কোম্পানিটির ‘এইচ২০ এআই’ চিপ চীনে রপ্তানি করতে লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে, যা এনভিডিয়ার শীর্ষ চাহিদাসম্পন্ন অন্যতম চিপ বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
এসব নিয়ম এসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের অংশ হিসাবে, যেখানে দুই দেশই একে অপরের বিভিন্ন পণ্যের ওপর চড়া বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করেছে।
বুধবার এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ৭ শতাংশ।
মঙ্গলবার কোম্পানিটি বলেছে, তাদের ‘এইচ২০ চিপ’ হংকং’সহ চীনের কাছে বিক্রির জন্য অনুমতি নিতে হবে বলে গত সপ্তাহে জানিয়েছিল মার্কিন সরকার। ফেডারেল কর্মকর্তারা তাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন, লাইসেন্সের এমন প্রয়োজনীয়তা “অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্যকর হবে”।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য বিবিসির অনুরোধে সাড়া দেয়নি এনভিডিয়া।
প্রযুক্তিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ’-এর মার্ক আইনস্টাইন বলেছেন, এনভিডিয়ার অনুমান করা সাড়ে পাঁচশ কোটি ডলারের ক্ষতির বিষয়টি তার অনুমানের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।
তবে তিনি বলেছেন, “এটি অবশ্যই বড় অংকের অর্থ। তবে এতো বেশিও নয়, যা এনভিডিয়া বহন করতে পারবে না।
“গত কয়েক দিন ও সপ্তাহগুলোতে আমরা যেমনটা দেখেছি, এটা মূলত আলোচনার কৌশল হতে পারে। অদূর ভবিষ্যতে শুল্ক নীতিতে কিছু ছাড় বা পরিবর্তন দেখলে আমি অবাক হব না। কারণ এটি কেবল এনভিডিয়ার ওপরই প্রভাব ফেলবে না বরং পুরো মার্কিন সেমিকন্ডাকটর ইকোসিস্টেমের ওপরই প্রভাব ফেলবে।”
১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি এনভিডিয়া মূলত গ্রাফিক্স চিপ তৈরির জন্য পরিচিতি ছিল, বিশেষ করে কম্পিউটার গেইমের জন্য।
বিবিসি লিখেছে, এআই বিপ্লবের অনেক আগে থেকেই তাদের তৈরি বিভিন্ন চিপে এমন ফিচার যোগ করতে শুরু করে এনভিডিয়া যা মেশিন লার্নিংয়ে সহায়তা করতে পারে। আর এখন এনভিডিয়াকে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রবর্তিত ‘পারস্পরিক’ শুল্কের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, বিভিন্ন কোম্পানিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পণ্য উৎপাদনে উৎসাহিত করা।
শুক্রবার স্মার্টফোন, কম্পিউটার ও অন্যান্য কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে শুল্ক থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল হোয়াইট হাউস। যার মধ্যে ছিল চীনা আমদানির ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্কও।
তবে একদিনের ব্যবধানে তা পরিবর্তন করেন ট্রাম্প। এগুলোকে কেবল অন্য এক শুল্কনীতির আওতায় আনা হচ্ছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প বলেছেন, শিগগিরই তিনি আমদানি করা সেমিকন্ডাকটরের জন্যও শুল্ক হার ঘোষণা করবেন।
“চিপ, সেমিকন্ডাকটরসহ অন্যান্য জিনিস আমরা আমাদের দেশেই তৈরি করতে চাই।”
তিনি আরও বলেছেন, চীনের মতো অন্য কোনো দেশের কাছে ‘জিম্মি’ থাকবে না যুক্তরাষ্ট্র।