এআই চিপের দৌড়ে ‘ধরাছোঁয়ার বাইরে’ চলে যাচ্ছে এনভিডিয়া

বৃহস্পতিবার এনভিডিয়ার শেয়ার প্রায় ১৪ শতাংশ বেড়ে গিয়ে ঠেকেছে দুইশ ৩৬ দশমিক সাত ডলারে। বছরান্তে কোম্পানির শেয়ারমূল্য বেড়েছে ৬০ শতাংশ।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Feb 2023, 10:29 AM
Updated : 25 Feb 2023, 10:29 AM

বৈশ্বিকভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থার উত্থানে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে যেতে পারে চিপ নির্মাতা এনভিডিয়া। এমনই দেখা যাচ্ছে কোম্পানির প্রান্তিকের হিসাবে।

এই প্রযুক্তি নিয়ে বছরের পর বছর কাজ করা একমাত্র কোম্পানি না হলেও, অন্যান্য চিপ নির্মাতা কোম্পানিগুলোর মধ্যে তারাই বিজয়ী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির প্রধান চিপ সরবরাহক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে কোম্পানিটি।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রযুক্তি শিল্পে বিনিয়োগের ‘সম্ভাবনাময় জায়গা’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। যদিও ২০২২ সালে এই খাতে ব্যাপক ছাঁটাই কার্যক্রম দেখা গেছে। আর পরীক্ষামূলক বিভিন্ন ‘বাজি’তেও পিছিয়ে গেছে এটি।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির আগ্রহ বেড়েছে। বুধবার প্রকাশিত এনভিডিয়ার প্রান্তিকের হিসাবেও এর প্রতিফলন দেখা গেছে; প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ফলাফল দেখিয়েছে কোম্পানিটি। এমনকি ছাড়িয়ে গেছে ওয়াল স্ট্রিটের প্রত্যাশাও। এর বিপরীতে, প্রতিদ্বন্দ্বী চিপ নির্মাতা ইনটেল ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ার পাশাপাশি নিজেদের লভ্যাংশও হারিয়েছে।

বৃহস্পতিবার এনভিডিয়ার শেয়ার প্রায় ১৪ শতাংশ বেড়ে গিয়ে ঠেকেছে দুইশ ৩৬ দশমিক সাত ডলারে। বছরান্তে কোম্পানির শেয়ারমূল্য বেড়েছে ৬০ শতাংশ। ‘ফিলাডেলফিয়া সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডেক্স’ -এর হিসাব অনুযায়ী, এটি তাদের লাভের প্রায় তিনগুণ।

কোম্পানিটি ব্যবসা শুরু করেছিল বিভিন্ন পিসি’র জন্য গ্রাফিক্স চিপ তৈরির মাধ্যমে। আর এতে বিভিন্ন ভিডিও গেইম তুলনামূলক বাস্তবসম্মত দেখা যায়। পরবর্তীতে, কোম্পানিটি ‘ক্রিপ্টো খাতের স্রোতেও’ প্রবেশ করেছে, যেখানে এর বিভিন্ন গ্রাফিক্স কার্ডের সক্ষমতা ‘মাইনিংয়ের’ কাজে ব্যবহৃত হতো। আর এখন উৎপাদনশীল এআই তৈরির দিকে জোর দিচ্ছে কোম্পানিটি।

এনভিডিয়ার উত্থানে বৃহস্পতিবার কোম্পানির বাজারমূল্য বেড়েছে সাত হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। ফলে, কোম্পানির বাজারমূল্য এখন ৫৮ হাজার কোটি ডলারের বেশি, যা ইনটেলের প্রায় পাঁচগুণ। ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালানো সবচেয়ে বড় মার্কিন কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে এর অবস্থান সাত নম্বরে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির সাফল্যের চাবিকাঠি হলো ‘গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (জিপিউ)’ বাজারের প্রায় ৮০ শতাংশই তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।

এই ‘বিশেষ’ চিপ মাইক্রোসফট সমর্থিত সফটওয়্যার কোম্পানি ওপেনএআই’র জনপ্রিয় চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি’তেও প্রয়োজনীয় কম্পিউটিং ক্ষমতা প্রদান করে।

‘বিশেষ চিপ’

এআই কম্পিউটিংয়ে ব্যবহৃত নির্দিষ্ট ধরনের গণিত দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনার উদ্দেশ্যে নকশা করা হয়েছে গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট। অন্যদিকে, ইনটেলের সাধারণ ‘সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (সিপিইউ)’ তুলনামূলক কম দক্ষতায় বিভিন্ন কম্পিউটিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে।

গবেষণা কোম্পানি গার্টনার বলছে, প্রযুক্তি শিল্পের দখল নিয়ে নিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর ২০২৬ সাল নাগাদ বিভিন্ন ডেটা সেন্টারে জিপিইউ’র মতো বিশেষ চিপ ব্যবহারের সম্ভাবনা ১৫ শতাংশের বেশি, যা ২০২০ সালেও তিন শতাংশের নীচে ছিল।

বুধবার এনভিডিয়ার পাশাপাশি এর প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি ‘অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস (এএমডি)’র শেয়ারমূল্যও বেড়েছে। জিপিইউ শিল্পে দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানিটির শেয়ারমূল্য বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।

“হার্ডওয়্যার ও প্রক্রিয়াকরণে এআই বিপ্লবের নেতৃত্ব দিচ্ছে এমন দুটি কোম্পানি হলো এনভিডিয়া ও এএমডি। আমাদের মতে, এই দুটি কোম্পানিই সবার ওপরে অবস্থান করছে।” --বলেন মার্কিন বিনিয়োগ কোম্পানি ‘পাইপার স্যান্ডলার’-এর বিশ্লেষক হার্ষ কুমার।