চোখের মণি ‘স্ক্যান করা’ ক্রিপ্টোয় যোগ দিলেন চ্যাটজিপিটি নির্মাতা

মঙ্গলবার নিজের ইউরোপ সফরে এক ‘সিলভার অর্ব’ স্ক্যানারের মাধ্যমে এই প্রকল্পে সাইন আপ করেন অল্টম্যান। কারণ, সেখানে এই প্রযুক্তির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2023, 08:34 AM
Updated : 25 May 2023, 08:34 AM

অবশেষে নিজের তৈরি ক্রিপ্টোমুদ্রা ‘ওয়ার্ল্ডকয়েন’-এ সাইন আপ করেছেন ওপেনএআই প্রধান স্যাম অল্টম্যান।

সম্প্রতি নিজের ক্রিপ্টো প্রকল্পের জন্য ১০ কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছেন অল্টম্যান । আর বিনামূল্যে বায়োমেট্রিক ডেটার মাধ্যমে ক্রিপ্টোমুদ্রা লেনদেনের জন্য এতে লাখ লাখ মানুষের চোখের মণি স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে।

এই সপ্তাহের আগ পর্যন্ত অল্টম্যান এই প্রকল্পে যোগ দিতে পারেননি কারণ তার নিজের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এখনও এটি চালু করা সম্ভব হয়নি।

মঙ্গলবার নিজের ইউরোপ সফরে এক ‘সিলভার অর্ব’ স্ক্যানারের মাধ্যমে এই প্রকল্পে সাইন আপ করেন অল্টম্যান। কারণ, সেখানে এই প্রযুক্তির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। 

আইরিস স্ক্যান করে পাওয়া তথ্য পরবর্তীতে যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে। ওয়ার্ল্ডকয়েনের আনুষ্ঠানিক উন্মোচনের পর বিনামূল্যে এই ডিজিটাল মুদ্রার ভাগও পাবেন তিনি ওই বায়োমেট্রিক ডেটা যাচাইয়ের মাধ্যমে।

কোম্পানির হিসাব অনুযায়ী, এরইমধ্যে ১৫ লাখের বেশি মানুষ এই প্রকল্পে সাইন আপ করেছেন। আর আসন্ন সপ্তাহগুলোয় এর আনুষ্ঠানিক উন্মোচন হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

এই ক্রিপ্টোমুদ্রাকে কোম্পানি এমন এক ‘নতুন সমন্বিত মালিকানাধীন বৈশ্বিক মুদ্রা’ হিসেবে ব্যাখ্যা করছে, যা ন্যায্য উপায়ে যত বেশি সম্ভব মানুষের কাছে বিতরণ করা হবে। কোম্পানির দাবি, বিশ্বের প্রত্যেক নাগরিকই বিনামূল্যে এর অংশীদার হওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচিত হবেন।

‘ওয়ার্ল্ডকয়েন’ টোকেন বা ‘ডব্লিউএলডি’ নামে পরিচিত এই ডিজিটাল মুদ্রার কার্যক্রম অন্যান্য ক্রিপ্টো মুদ্রার মতোই, যা বিভিন্ন জায়গায় অর্থ পরিশোধের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রকল্পটির ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়, ‘রেমিটেন্স থেকে শুরু করে কোনো শিল্পীকে আর্থ প্রদান, এমনকি বিভিন্ন পণ্য ও সেবা কেনাবেচার ক্ষেত্রেও’ এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

বিভিন্ন বিনামূল্যের উপহার ও নগদ অর্থের বিনিময়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ব্যবহারকারীদের বায়োমেট্রিক ডেটা সংগ্রহ করায় এরইমধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে ওয়ার্ল্ডকয়েন। তবে কোম্পানির দাবি, ক্রিপ্টোতে এই বিশেষ প্রক্রিয়া ব্যবহারের মানে এর মাধ্যমে ন্যায্য ও সম্পৃক্ত উপায়ে ক্রিপ্টো বিতরণের সুযোগ মিলবে।

কোম্পানি বলছে, ‘ক্রোম অর্ব’ নামের এক গোলাকার ডিভাইসের সহায়তায় ব্যবহারকারীর চোখ স্ক্যান করার পর তাকে ওয়ার্ল্ডকয়েনের বরাদ্দ করা অংশ দেওয়া হবে। এর মানে কেউ এই ডিজিটাল মুদ্রায় নিজের একক অংশের বেশি পাওয়ার সুবিধা পাবে না। তবে অন্যান্য ক্রিপ্টোমুদ্রার মতোই এতে পৃথকভাবে কেনাবেচা ও ব্যবসা করা যাবে।

“এমন কার্যক্রম আগে কখনও ঘটেনি। তাই এর ফলাফলও অনিশ্চিত।” --২০২১ সালে এক ব্লগ পোস্টে ওয়ার্ল্ডকয়েনের অন্যান্য সহ-প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে যৌথভাবে লিখেন অল্টম্যান।

“তবে আমরা এই ধারণা নিয়ে আশাবাদী কারণ ব্লকচেইন ও ক্রিপ্টোগ্রাফির মতো বিপ্লবী নতুন প্রযুক্তি আমাদের সমন্বিত উপায়ে এমন কিছু করার সুযোগ দেয়, যা বিভিন্ন সরকারও করে দেখাতে পারেনি। সেটি হলো, বৈশ্বিক স্তরে ব্যক্তিগত ক্ষমতায়ন ও সুযোগের সমতা বৃদ্ধি।”