নতুন প্রজন্মের থান্ডারবোল্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে অন্তত ৪০ গিগাবিট গতির নিরবচ্ছিন্ন ডেটা ট্রান্সফার সুবিধা নিশ্চিত করতে চাইছে ইনটেল।
Published : 21 Oct 2022, 02:52 PM
ডেটা ট্রান্সফার আর চার্জিং প্রযুক্তি থান্ডারবোল্টের নতুন সংস্করণ দেখিয়েছে ইনটেল। মার্কিন এ টেক জায়ান্টের দাবি, প্রতি সেকেন্ডে ৮০ গিগাবিট গতিতে ডেটা ট্রান্সফার করতে পারবে নতুন প্রজন্মের থান্ডারবোল্ট প্রযুক্তি।
হাই-রেজুলিউশন ডিসপ্লের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের থান্ডারবোল্ট ব্যবহারের সময় ক্ষেত্রবিশেষে প্রতি সেকেন্ড ডেটা ট্রান্সফারের গতি ১২০ গিগাবিটেও নেওয়া যাবে বলে দাবি করেছে আয়ের হিসেবে বিশ্বের বৃহত্তম সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদক।
তবে, নতুন থান্ডারবোল্ট কবে নাগাদ বাজারে আসবে, বা বাজারে একে কী নামে ডাকা হবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য ইনটেল দেয়নি।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট বলছে, বৃহস্পতিবারে নতুন প্রজন্মের যে থান্ডারবোল্ট প্রযুক্তি ইনটেল দেখিয়েছে, সেটা কার্যত ইউএসবি ৪ ভার্সন ২ মানের আরও পরীক্ষিত একটি সংস্করণ।
থান্ডাবোল্ট আর ইউএসবি প্রযুক্তির ইতিহাসও ঠিক সরল নয়। প্রযুক্তি শিল্পে থান্ডারবোল্ট প্রযুক্তির অভিষেক হয়েছিল ইনটেলের নিজস্ব উদ্ভাবন হিসেবে। কিন্তু পরে ইউএসবি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছিল যে কোম্পানিগুলো, তাদের জন্য থান্ডারবোল্ট প্রযুক্তি উন্মুক্ত করে দেয় ইনটেল।
বর্তমান বাজারের থান্ডারবোল্ট যন্ত্রাংশগুলো কার্যত ইউএসবি প্রযুক্তির আরও মার্জিত ও পরীক্ষিত সংস্করণ হিসেবেই বিবেচিত। ডকিং স্টেশন, কম্পিউটারের পাশে থাকা পোর্টসহ অন্যান্য ডিভাইসে বজ্রপাতের লোগো থাকার মানে হচ্ছে, ইনটেলের স্বীকৃত ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় পাস করেছে যন্ত্রাংশগুলো।
সিনেট বলছে, নতুন প্রজন্মের থান্ডারবোল্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্যত প্রতি সেকেন্ডে ৪০ গিগাবিট গতিতে নিরবচ্ছিন্ন ডেটা ট্রান্সফার সুবিধা নিশ্চিত করতে চাইছে ইনটেল। একই সঙ্গে দুটি ফোর কে মনিটর, ‘ডিসপ্লেপোর্ট’ প্রযুক্তি সমর্থন এবং ল্যাপটপের জন্য একশ ওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা থাকবে নতুন থান্ডারবোল্টের।
ল্যাপটপের সঙ্গে অন্যান্য হার্ডওয়্যারের সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে থান্ডারবোল্ট ও ইউএসবি ৪ প্রযুক্তি। এর মধ্যে থাকতে পারে হাই-রেজুলিউশন ফোর কে মনিটর, এক্সটার্নাল হার্ডড্রাইভ এবং উচ্চগতির নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার।
সৃজনশীল পেশার কর্মী আর গেইমাররা ডেস্কটপ পিসির বদলে ক্রমশ বহনযোগ্য প্ল্যাটফর্মের দিকে ঝুঁকতে থাকায় এ প্রযুক্তির গুরুত্ব আরও বেড়েছে বলে মনে করছে সিনেট।কিন্তু হরেক রকমের পোর্ট আর ডেটা ট্রান্সফারের মান ক্রেতাদের জন্য বিভ্রান্তিকর।
হার্ডওয়্যার নির্মাতা সাতেচির প্রেসিডেন্ট ব্রক গুক্লু বলেন, “আমরা আবিষ্কার করেছি যে ইউএসবি-সি, থান্ডারবোল্ট আর ইউএসবি-৪ এর মূল পার্থক্য সম্পর্কে সাধারণ ব্যবহারকারীদের ধারণা খুবই কম। কারণ, সবগুলো পোর্ট দেখতে একই রকম, বেশিরভাগ ব্যবহারকারী মনে করেন সবগুলো একই পোর্ট। পোর্টগুলো যে ভিন্ন ভিন্ন প্রোটোকল ও ফিচার সমর্থন করে, তা তারা বুঝতেই পারেন না।”
ইউএসবি এবং থান্ডারবোল্ট দুই প্রযুক্তিতেই পুরনো কম্পিউটারের সঙ্গে নতুন ডিভাইসের সংযোগ স্থাপনের সুযোগ রেখেছে নির্মাতারা।
তবে অসংখ্য তারের প্যাঁচ আর ডিভাইসের সর্বোচ্চ গতিতে কাজ করার ব্যর্থতা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য। একই সঙ্গে একাধিক ধরনের ডেটা ট্রান্সফারের সক্ষমতা থাকায় থান্ডারবোল্ট প্রযুক্তি এ জটিলতার আংশিক সমাধান করতে পারবে বলে মনে করছেন ইলেকট্রনিক পণ্য নির্মাতা ভিশনটেকের পরিচালক নিক ব্রিল।
তিনি বলেন, “থান্ডাবোল্টের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক এটাই। আপনি যা ইচ্ছা তাই একটা থান্ডারবোল্ট পোর্টে জুড়ে দিয়ে দেখতে পারেন; সম্ভবত সেটা কাজ করবে।”