নাসা আশা করছে, ভবিষ্যতে মঙ্গলে যাত্রীবাহী মিশন ও সৌরজগতে অন্যান্য অন্বেষণের ক্ষেত্রে লেজার প্রযুক্তি সহায়ক হতে পারে।
Published : 08 Oct 2024, 04:40 PM
পৃথিবী থেকে প্রায় ৪৬ কোটি কিলোমিটার দূরে সফলভাবে লেজার সংকেত পাঠিয়েছে নাসা, যা আগের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলার পাশাপাশি সৌরজগৎ নিয়ে প্রচলিত ধারণায় বদল আনার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।
মাইলফলকটি অর্জন করেছে নাসার ‘ডিপ স্পেস অপটিকাল কমিউনিকেশন্স’ নামের প্রযুক্তি ব্যবস্থা। মহাশূন্যের গভীরে লেজার ব্যবহার করে বার্তা পাঠানো সম্ভব কি না, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা এর কাজ।
প্রচলিত রেডিও কম্পাঙ্কের তুলনায় লেজারে একশ গুণ কম্পঙ্ক পাওয়া যায়, এর ফলে আরও জটিল ও এইচডি ডেটা আদান প্রদানের সুযোগ মিলবে। তবে, এমনটি করতে এর কার্যকারিতা আরও নিখুঁত হতে হবে বলে উঠে এসেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদনে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে উৎক্ষেপণ করা ‘সাইক’ নামের নভোযানে এ সংকেত পাঠায় নাসা, যার প্রধান মিশন ছিল, এই একই নামের গ্রহাণু নিয়ে গবেষণা করা। এর পাশাপাশি, মহাকাশে লেজার যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্ভাবনা আছে কি না, সে বিষয়টিও এ মিশনে পরীক্ষা করে দেখছে নাসা।
এ লেজার সংকেতের দুরত্ব প্রায় ৪৬ কোটি কিলোমিটার, যা পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথের মধ্যে সর্বোচ্চ দূরত্বের প্রায় সমান।
নাসা আশা করছে, ভবিষ্যতে মঙ্গলে যাত্রীবাহী মিশন ও সৌরজগতে অন্যান্য অন্বেষণের ক্ষেত্রে লেজার প্রযুক্তি সহায়ক হতে পারে। আর এ সফল পরীক্ষা একটি বড় অগ্রগতিকে চিহ্নিত করে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
“এ মাইলফলক অনেক বড়। লেজার প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক নিখুঁত হতে হয়। আর সাইক উৎক্ষেপণ করার আগে আমরা জানতাম না যে, আমাদের সর্বোচ্চ দূরত্বে এর কার্যকারিতা কতটা হ্রাস পাবে,” এক বিবৃতিতে বলেছেন নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি’র প্রকল্প প্রধান মিরা শ্রিনিভাসান।
“সংকেত ট্র্যাক ও চিহ্নিত করতে আমরা যেসব পদ্ধতি ব্যবহার করেছি, সেগুলো যাচাই করা হয়েছে। এ ছাড়া, অপটিক্যাল যোগাযোগ ব্যবস্থা যে সৌরজগৎ অন্বেষণের শক্তিশালী ও যুগান্তকারী উপায় হতে পারে, সে নিশ্চয়তাও মিলেছে এতে।”
এ গবেষণায় কাজ করা গবেষণা দলকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ অভিনন্দন জানিয়েছেন নাসা প্রধান বিল নেলসনও।
“এ অভূতপূর্ব অর্জন আমাদের সৌরজগৎ অন্বেষণের উপায় একেবারে বদলে দেবে,” লেখেন তিনি।
গত বছরের শেষে নাসা ঘোষণা করেছিল, তারা সফলভাবে এমনই এক লেজার ট্রান্সমিশন সম্পন্ন করেছে, যার দূরত্ব ছিল ১৬ কোটি কিলোমিটার।
এর পর থেকে পৃথিবী থেকে সর্বোচ্চ দূরত্বে ভ্রমণ করার বিভিন্ন নতুন রেকর্ড গড়েই চলেছে সাইক।