ইন্টারনেট জুড়ে একটি বিশাল ‘মিম’ সংগ্রহের উৎস হয়ে ওঠে ছবিটি। কেউ কেউ তো কাবুসোকে ‘ইন্টারনেটের মোনা লিসা’ বলেও অভিহিত করেছেন।
Published : 26 May 2024, 03:28 PM
জনপ্রিয় সব ‘মিম’ ও বিখ্যাত ক্রিপ্টোকারেন্সি মিমকয়েন ‘ডজকয়েন’-এর আইকন দেওয়া কুকুরটি মারা গেছে।
বিষয়টি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে নিশ্চিত করেছেন কুকুরটির মালিক আতসুকো সাতো। কাবোসু নামের ‘শিবা ইনু’ জাতের আদুরে কুকুরটির সম্ভবত ১৮ বছর বয়স হয়েছিল। তবে, তার মালিক উদ্ধার করা প্রাণীটির সঠিক জন্ম তারিখ জানেন না বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।
“আমি তাকে আদর করার সময় নিঃশব্দে চলে যায়, যেন সে ঘুমিয়ে পড়েছে।” – দ্য গার্ডিয়ানের প্রকাশিত এক ব্লগ পোস্টে লিখেছেন সাতো।
“আমি মনে করি কাবো-চান বিশ্বের সবচেয়ে সুখী কুকুর ছিল। আর আমি সবচেয়ে সুখী মালিক।”
জাপানি এ কুকুরটি শুধু ক্রিপ্টোকারেন্সি ডজকয়েনকেই অনুপ্রাণিত করেনি, ২০১০ সালে তার আইকনিক এক ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ইন্টারনেট জুড়ে একটি বিশাল ‘মিম’ সংগ্রহের উৎস হয়ে ওঠে ছবিটি। কেউ কেউ তো কাবুসোকে ‘ইন্টারনেটের মোনা লিসা’ বলেও অভিহিত করেছেন।
কুকুরদের এক আশ্রয়স্থল থেকে কাবুসোকে নিয়ে এসেছিলেন সাতো। এর দুই বছর পরে তিনি ওই বিখ্যাত ছবিটি তুলেছিলেন। ছবিতে দেখা যায়, কাবুসো দুই পা সামনে দিয়ে সোফায় বসে আছে এবং ক্যামেরায় তাকিয়ে অনেকটা বাঁকা হাসির মতো হাসছে।
সে সময় ছবিটি সোশাল মিডিয়া সাইট রেডিট ও টাম্বলারে ভাইরাল হয়। একজন রেডিট ব্যবহারকারী ভাইরাল ছবিটিকে ‘ডজ’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যা ইংরেজিতে ‘ডগ’ বা কুকুরের ইচ্ছাকৃত ভুল বানান।
পরবর্তীতে ছবিটি ‘এনএফটি ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক’ হয়ে ওঠে এবং ৪০ লাখ ডলারে বিক্রি হয়। এটি তখনকার কথা যখন এনএফটির জন্য মানুষরা অর্থ প্রদান করতেন। ‘মিমকয়েন’ হিসেবে ডজকয়েন প্রকল্পটি দুই সফটওয়্যার প্রকৌশলী রসিকতা করে শুরু করেছিলেন। এখন এটি দুই হাজার ৩০০ কোটি ডলার মূলধন নিয়ে, সবচেয়ে মূল্যবান অষ্টম ক্রিপ্টোকারেন্সিতে পরিণত হয়েছে। সম্ভবত কাবোসুর মৃত্যুর খবরে শুক্রবারও এর দাম বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে এনগ্যাজেট।
ডজকয়েন ক্রিপ্টো কারেন্সির পরিচিত সমর্থক ছিলেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। এমনকি নির্দিষ্ট টেসলা পণ্য কেনার জন্য মুদ্রা হিসেবেও ব্যবহার করা যেত এটি। অন্যান্য আরও বিখ্যাত সমর্থকের মধ্যে রয়েছেন মার্কিন র্যাপার স্নুপ ডগ, মার্কিন সংগীতশিল্পী জিন সিমন্স এবং চলচিত্র প্রযোজক মার্ক কিউবান।
গত বছরের নভেম্বরে জাপানের শহর সাকুরায় কাবোসুর একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে সেটি তৈরিতে খরচ হয়েছে অন্তত এক লাখ মার্কিন ডলার।
“গত কয়েক বছরে আমি কাবোসুর অনলাইন সংস্করণ, দূর থেকে দেখা এ সব অপ্রত্যাশিত জিনিসকে আমাদের বাস্তব জীবনের সাথে যুক্ত করতে পেরেছি।” – লিখেছেন সাতো।
বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করার জন্য তিনি তার প্রিয় শিবা ইনু কুকুরটির জনপ্রিয়তাকে ব্যবহার করেছেন। এর মধ্যে অন্তত এক লাখেরও বেশি ডলার তিনি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক এনজিও সেইভ দ্য চিলড্রেন-এ।